বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিভাজন ও সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir) বলেছেন, “শেখ হাসিনাকে আর এই দেশে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ দেব না।” রোববার (৩ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (Jatiyatabadi Chhatra Dal) আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির ঘোষিত মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই বিশাল সমাবেশের আয়োজন করা হয়। শাহবাগ মোড় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক, মৎস্যভবন ও কাঁটাবন মোড় পর্যন্ত এলাকাজুড়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীর ঢল নামে। পুরো এলাকাটি যেন পরিণত হয় এক বিশাল জনসমুদ্রে।
সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের পাশের দেশে ভারতবর্ষে ফ্যাসিস্ট হাসিনা আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি ও তার লোকজন মাঝেমধ্যেই হুমকি দিচ্ছেন যে, বাংলাদেশে আক্রমণ করবে। ভেতর থেকেও গোলযোগ সৃষ্টি করার নানা ষড়যন্ত্র চলছে। আজ এখান থেকেই আমাদের শপথ নিতে হবে—তাকে আর কখনো এই দেশে রাজনীতি করতে দেব না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কারও কাছে মাথা নত করব না। দেশকে নিজেরাই গড়ে তুলব—এই নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারেক রহমান।” এ সময় তিনি তারেক রহমান (Tarique Rahman)-এর ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ স্লোগান উচ্চারণ করে বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ আজ তার অপেক্ষায় আছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে।”
লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ছাত্রদলের অভিভাবক হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার উপস্থিতিতে সমাবেশের রাজনৈতিক গুরুত্ব আরও বাড়ে। ফখরুল বলেন, “তারেক রহমান ও ড. ইউনূস আলোচনা করে ঠিক করেছেন—আগামী ফেব্রুয়ারিতে হবে সেই নির্বাচন। দেশের মানুষ অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে তার প্রত্যাবর্তনের দিকে।”
মেধা ও জ্ঞানচর্চার ওপর জোর দিয়ে ছাত্রদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “মেধা ছাড়া সামনে এগোনো সম্ভব নয়। আমাদের বুদ্ধিমত্তা, জ্ঞান, বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গঠনে এই প্রজন্মের ছাত্ররাই মূল চালিকাশক্তি হবে।”
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন সাবেক ছাত্রনেতা শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আমান উল্লাহ আমান, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, ছাত্রদলের আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহইয়া, শ্যামল মালুম প্রমুখ।
এছাড়া ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও রাশেদ ইকবাল খান।
এই সমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি নতুন করে আবারও রাজনীতির মাঠে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করল। বক্তারা বলেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ছিল শুধু অতীতের নয়, আগামীর বাংলাদেশ গড়ার সম্ভাবনারও সূচনা।