অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে সামনে আসছে বড় ধরনের পরিবর্তন। দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, আগামী এক মাসের মধ্যেই কয়েকজন উপদেষ্টা ও বিশেষ সহকারীর দপ্তর বদল করা হবে, আবার কয়েকটি দপ্তরে যোগ দেবেন নতুন মুখ। এমনকি ছাত্র প্রতিনিধিত্ব করা দুজন উপদেষ্টাকেও সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে দুই ছাত্র উপদেষ্টাকে।
সরকারের ঘনিষ্ঠ মহল বলছে, এই রদবদলের পেছনে মূলত তিনটি কারণ কাজ করছে। প্রথমত, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে মন্ত্রণালয়গুলোর কাজের গতি বাড়ানো। দ্বিতীয়ত, কয়েকজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে উঠা বিতর্ক সামাল দিয়ে তাঁদের ভাবমূর্তি রক্ষা করা। আর তৃতীয়ত, কিছু উপদেষ্টার ওপর চাপ কমিয়ে নতুন নেতৃত্ব যুক্ত করা। লক্ষ্য—২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের আগে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি নিয়ে দায়িত্ব শেষ করা।
বর্তমানে উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন ২২ জন, যাঁদের হাতে ৪১টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। এর মধ্যে দুজন উপদেষ্টাকে সামলাতে হচ্ছে তিনটি করে মন্ত্রণালয়। মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান (Muhammad Faozul Kabir Khan) দেখভাল করছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে শেখ বশিরউদ্দীন (Sheikh Bashiruddin) দায়িত্বে আছেন বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট, এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের। এছাড়া আরও ১০ জন উপদেষ্টা সামলাচ্ছেন দুটি করে মন্ত্রণালয়।
সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব রয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus)-এর ওপর। তিনি একাই সামলাচ্ছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়—মোট পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ খাত।
বর্তমান কাঠামোয় উপদেষ্টা পদমর্যাদার বিশেষ সহকারী, বিশেষ দূত ও হাই রিপ্রেজেন্টিটিভ রয়েছেন তিনজন। খুব শিগগিরই এই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার বিশেষ সহকারী রয়েছেন ছয়জন, আর সিনিয়র সচিব পদমর্যাদার বিশেষ সহকারী আছেন একজন। যদিও প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার সংখ্যা বাড়ছে না, তবে তাঁদের দপ্তর পুনর্বণ্টন হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, দপ্তর বণ্টনে এবার থাকবে বড় চমক। কয়েকজন উপদেষ্টা ও প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার বিশেষ সহকারীকে বড় মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে অপেক্ষাকৃত ছোট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আবার ছোট মন্ত্রণালয়ে থাকা উপদেষ্টা ও সহকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে আরও বড় দায়িত্ব। নতুন মুখের মধ্যেও থাকবেন কেউ কেউ, যারা ইতিমধ্যে বর্তমান সরকারের সঙ্গে কাজ করছেন। পাশাপাশি সরকারের বাইরের থেকেও আসবে নতুন নেতৃত্ব।