পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত নেতা ইস্রাফিল হাওলাদার (Israfi HawaLadar) আবারো রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনায়। একাধিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর সম্প্রতি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিলেন জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami)-তে। শুধু তিনিই নন, তার সঙ্গে উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আল আমিন খানসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি এই দলে অন্তর্ভুক্ত হন।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে নাজিরপুর দাখিল মাদরাসা মাঠে অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সমাবেশে সদস্য ফরম পূরণের মধ্য দিয়ে তারা নতুন রাজনৈতিক পরিচয়ে আত্মপ্রকাশ করেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক মহল জানায়, ইস্রাফিল হাওলাদার দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়েছিল উপজেলা বিএনপিতে। অবশেষে চলতি বছরের ৯ মে কেন্দ্রীয় নির্দেশে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে। অভিযোগের তালিকায় ছিল, একটি দোকানঘরে খালেদা জিয়া ও জিয়াউর রহমানের ছবি টাঙিয়ে সেটিকে দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করাও।
যোগদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে ইস্রাফিল দাবি করেন, “আমি মুসলমান হিসেবে ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে চাই। বিএনপি ইসলামী আদর্শে পরিচালিত নয়, তাই আমি জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়েছি। এখন থেকে সারাজীবন ইসলামের পক্ষে কাজ করব। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো নিছক রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।”
তবে বিতর্কিত অতীত থাকা একজন নেতাকে জামায়াতে অন্তর্ভুক্ত করায় তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে। নাজিরপুরের স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ইস্রাফিলের কর্মকাণ্ডের কারণে এলাকায় একাধিকবার উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলে আরও আলোচিত আরেকটি ঘটনা ঘটেছে। যশোর জেলা যুবদলের বহিষ্কৃত নেতা ইস্কান্দার আলী জনি (Iskandar Ali Joni) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাত ৮টার দিকে ঢাকার খিলক্ষেতের তালের টেক থানার দক্ষিণ নামাপাড়া এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। যশোর জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনজুরুল হক ভূঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৪২ বছর বয়সী জনি ছিলেন যশোর জেলা যুবদলের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। জেলা পুলিশের তথ্যমতে, তিনি দপ্তর সম্পাদক কামরুল ইসলামের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। পাশাপাশি বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুৎসা রটানো এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগও আছে।
সম্প্রতি এক ফেসবুক লাইভে তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের (Obaidul Quader) যশোর সেনানিবাসে অবস্থানকালে তাকে ভারতে পালাতে সহায়তা করেছিলেন তৎকালীন যুবদল নেতা আনসারুল হক। এ বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তবে যশোর জেলা বিএনপি ও যুবদল এই বক্তব্যকে সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। সেনাবাহিনী ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একাধিক সাইবার নিরাপত্তা মামলা হয়। অবশেষে আত্মগোপনে থাকা জনিকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডিবি আটক করে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউজ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) এম হারুন অর রশিদ (Lt. Gen. (Retd.) Harun-ur-Rashid)-এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে তার লাশ ক্লাবের একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। সিএমপি সূত্র জানায়, রোববার রাতে তিনি ক্লাবের ভিআইপি কক্ষে ওঠেন এবং সোমবার সকালে দরজা না খোলায় জানালা দিয়ে তাকিয়ে মৃত অবস্থায় দেখতে পান কর্মীরা।
সাবেক সেনাপ্রধানের আত্মীয়রা ধারণা করছেন, তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। ৭৫ বছর বয়সী এম হারুন ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত। ২০০০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০০২ সালের জুন পর্যন্ত তিনি দেশের দশম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অবসরে গিয়ে তিনি ডেসটিনির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন, যা নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা ও সাজা হয়েছিল।
এদিকে, শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আশিক মাহমুদকে ইয়াবাসহ আটক করেছে র্যাব-১৪। রোববার (২৪ আগস্ট) রাতে উপজেলার কালাকুমা বৈশাখী বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে ১৪৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার হয়, যার আনুমানিক মূল্য ৪৩ হাজার টাকার বেশি। সোমবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
ঘটনার পরপরই শেরপুর জেলা ছাত্রদল আশিক মাহমুদকে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করে। র্যাব ও পুলিশ জানায়, এটি ছিল পূর্ব-পরিকল্পিত অভিযান।