মানিকগঞ্জে চাঞ্চল্যকর এক ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সিল ও স্বাক্ষর জাল করে নকল প্যাডে প্রত্যয়নপত্র তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় জামায়াত কর্মী সেলিম মোল্লা (Selim Molla)-র বিরুদ্ধে। ওই জাল প্রত্যয়নের শিকার হন এক কিশোর, যিনি নকল কাগজ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (ভোটার আইডি) করার চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়েন।
ঘটনার সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের গিলন্ড গ্রামের কিশোর মো. রবিউল হাসান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে গেলে ইউপি সচিবের হাতে ধরা পড়েন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, এলাকার প্রভাবশালী জামায়াত কর্মী সেলিম মোল্লা (৪০) তাকে এই প্রত্যয়নপত্র জোগাড় করে দেন। ভোটার আইডিতে বয়স বাড়ানো সম্ভব হবে বলে সেলিম আশ্বাস দিয়েছিলেন। কথায় বিশ্বাস করে রবিউল ফাঁদে পড়ে যান।
রবিউল মৃত সূর্য মিয়ার ছেলে। আর অভিযুক্ত সেলিম মোল্লা একই গ্রামের চাঁন মিয়ার (৬৫) ছেলে। বর্তমানে তিনি গিলন্ড বাজারের ইসলামী ব্যাংক (Islami Bank)-এর এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় ফিল্ড সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত। পাশাপাশি তিনি জামায়াতে ইসলামী রাজনীতির সক্রিয় কর্মী এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কমিটির সদস্য।
অভিযোগে বলা হয়েছে, রাকিব আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের নকল প্যাডে প্রধান শিক্ষক সানোয়ার হোসেন (Sanowar Hossain)-এর সিল ও স্বাক্ষর জাল করে প্রত্যয়নপত্র তৈরি করা হয়। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, “আমরা এ ধরনের কোনো প্রত্যয়নপত্র দেইনি। কাগজটি পুরোপুরি জাল। আমাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণার চেষ্টা করা হয়েছে। আমার সিল ও স্বাক্ষর ব্যবহৃত হওয়ায় আমি আইনি ব্যবস্থা নেব।”
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোহাম্মদ পিয়ার আলী (Mohammad Piar Ali) বলেন, “প্রত্যয়নপত্র হাতে আসতেই আমাদের সন্দেহ হয়। যাচাই করে নিশ্চিত হই এটা জাল। আমরা সঙ্গে সঙ্গে কিশোরকে সতর্ক করি এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানাই। পরে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়।”
তবে অভিযুক্ত সেলিম মোল্লা সব অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, তিনি কোনো জাল প্রত্যয়ন তৈরি করেননি। তার ভাষায়, “কেউ আমাকে মিথ্যা দোষারোপ করছে।”
অন্যদিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা জামায়াতের আমির ফজলুর হক (Fazlur Haque) সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্পষ্ট জবাব না দিয়ে বলেন, *“এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।”