জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। তবে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ (Ali Riaz) জানিয়েছেন, বর্ধিত এক মাস সময়ের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। তার মতে, এ কাজের জন্য এক মাসও লাগবে না, কারণ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ইতোমধ্যেই নেওয়া হয়েছে এবং দ্রুত একটি পরিণতি দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত কমিশনের বৈঠকের শুরুতেই অধ্যাপক আলী রীয়াজ মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি জানান, কমিশনের সভাপতি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে অবগত আছেন। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার আগে প্রধান উপদেষ্টাকে সনদ বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানানো হবে।
সনদ বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে চূড়ান্ত খসড়া পাঠানো হয়েছে। ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তাব এসেছে—কেউ বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে কার্যকর করার কথা বলেছে, আবার কেউ সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে।
কমিশনের বিশেষজ্ঞ প্যানেল এ বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট সুপারিশ দিয়েছে বলেও জানান আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবগুলোকে ছয় ভাগে ভাগ করা হয়েছে। অনেক বিষয় অধ্যাদেশ বা নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব, আর সংবিধান সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে বিশেষজ্ঞরা গণভোট বা বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের পরামর্শ দিয়েছেন। সরকার যেন তুলনামূলক সহজ উপায়ে দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করে, সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
সনদ স্বাক্ষর প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে দু’জন করে প্রতিনিধির নাম পাঠাতে বলা হয়েছিল। অধিকাংশ দলই নাম পাঠিয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে সরকার প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেবে।
তৃতীয় ধাপের এ বৈঠকে অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)সহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দার। কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. বদিউল আলম মজুমদার।