চার আলেমের ত্যাগ-সংগ্রামই হেফাজতের মূল শক্তি: আখতার হোসেন

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন (Akhtar Hossain) বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন এক অন্ধকার সময় ছিল যখন ইসলামের কথা বলা কিংবা ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলাটাই ভয়ের পরিবেশে রূপ নেয়। তিনি উল্লেখ করেন, সাধারণ মুসলমানদের ওপর নিপীড়ন চালানো হয়েছে, নামাজ পড়া, দাড়ি রাখা বা পাঞ্জাবি পরিধানকে জঙ্গিবাদের আলামত হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। আলেম-ওলামাদের দিন পর দিন কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে, নির্যাতন ও রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। সেই কঠিন সময়ে সাহসিকতার সঙ্গে পাশে দাঁড়িয়েছিল হেফাজতে ইসলাম, আর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন চারজন গুণী রাহবার।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে শায়খুল হাদিস পরিষদ আয়োজিত জাতীয় কনফারেন্সে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। আখতার জানান, হেফাজতের সেই চার রাহবার ছিলেন— শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমাদ শফী (রহ.), কায়েদে মিল্লাত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী (রহ.), শাইখুল হাদিস আল্লামা নূর হুসাইন কাসেমী (রহ.) এবং হযরতুল আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী (রহ.)। তাদের নেতৃত্ব, ত্যাগ আর সংগ্রামই হেফাজতে ইসলামের চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছিল। তিনি আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, “তারা হয়তো আজ আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাদের সাহসী ভূমিকা আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে যাচ্ছে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, জুলাই অভ্যুত্থানের সময় দেশের কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা কোনো ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত স্বার্থ ছাড়াই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। কেউ জীবন উৎসর্গ করেছেন, কেউ শহীদ হয়েছেন, আবার কেউ দীর্ঘদিন রাজপথে অবস্থান করেছেন—যতদিন না শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন।

এনসিপির এই নেতা দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, দেশের সাধারণ মুসলমানরা যেন আগামীতে নামাজ পড়া, দাড়ি রাখা বা ঢিলেঢালা পোশাক পরার কারণে আর কখনো নিপীড়নের শিকার না হন— সেই লক্ষ্যেই রাজনীতি চালিয়ে যেতে হবে। একইসঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, হেফাজতের নেতারা আপসহীন মানসিকতা নিয়ে ইসলামের স্বার্থে, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অটল ভূমিকা রেখেছিলেন। আখতার বিশ্বাস প্রকাশ করেন, সামনের দিনগুলোতেও বাংলাদেশের সাধারণ মুসলমানরা সেই পথেই এগিয়ে যাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *