বাংলাদেশের হাতে থাকা বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার দেশের আপৎকালীন সময় মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট নয় বলে সতর্ক করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ (Dr. Salehuddin Ahmed)। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় ও অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি জানান, ডলারের চাহিদা কমলেও দাম একই জায়গায় রাখা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপের কারণে। বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক দুই মিলিয়ন ডলার কিনেছে। তবে এর ফলে আমদানিকারকদের ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “ডলারের দাম স্থিতিশীল না রাখলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যারা বিদেশে থেকে রেমিট্যান্স পাঠান, তাদের স্বার্থও দেখতে হবে। কারণ তারাই আমাদের চালিকা শক্তি।”
ড. সালেহউদ্দিন স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা ডলার কিনছি, সেটি সত্যি। কিন্তু দেশের হাতে থাকা বর্তমান ডলার আপৎকালীন পরিস্থিতি সামলানোর জন্য যথেষ্ট নয়। যদি বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা হঠাৎ প্রয়োজন দেখা দেয়, তখন কী হবে? অনেকে মনে করেন ফরেন এক্সচেঞ্জ শুধু আমদানির জন্য, কিন্তু সঞ্চয় না থাকলে বিপদ বাড়বে।”
অতীতের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ২০০৭-০৮ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর থাকা অবস্থায় সিডর ও আইলার মতো দুর্যোগে কী ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছিল, তা তিনি কাছ থেকে দেখেছেন। তখনও পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়েছিল কঠিনভাবে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি।
সম্প্রতি পিপিআরসি জানিয়েছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ অস্বস্তিতে আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা শুধু বলেন, “পিপিআরসির প্রতিবেদন আমি দেখেছি।” এর বাইরে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
বৈঠকের বিষয়ে তিনি জানান, এবার কিছু বৈচিত্র্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সার ও খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (Shah Amanat International Airport)–এর রানওয়ে আপগ্রেড করার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। একইসঙ্গে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (Hazrat Shahjalal International Airport)–এর কন্ট্রোল রুম আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের ভেতরে অকটেনের ঘাটতি পূরণে আমদানি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যাতে জ্বালানি সংকট দেখা না দেয়।
চট্টগ্রামের বিমানবন্দর উন্নয়নের বিষয়ে তিনি জানান, বর্তমানে শাহ আমানতের রানওয়ে গ্রেড-১। বড় বিমান ওঠানামার সুবিধার্থে সেটি গ্রেড-২ তে উন্নীত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি ঢাকার কন্ট্রোল রুম আধুনিকীকরণের কাজও এগিয়ে নেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।