ইসরাইলের হাতে আটক শহিদুল আলমের ভিডিও বার্তা নিয়ে আওয়ামীলীগের মিথ্যাচার

গাজাগামী ফ্লোটিলা থেকে আটক আলোকচিত্রী শহিদুল আলম (Shahidul Alam)-এর ভিডিওবার্তা ঘিরে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তা খণ্ডন করেছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (PIB) ফ্যাক্টচেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ভিডিওটি কোনোভাবেই সাজানো নয়; এটি ছিল আগে থেকে রেকর্ড করা একটি বার্তা।

বাংলাফ্যাক্টের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, গাজাগামী ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশের খ্যাতনামা আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের ফেসবুক পেজে আজ সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। সেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, “যদি আপনারা এই ভিডিওটি দেখে থাকেন, তাহলে বুঝবেন আমাদেরকে ইসরাইলি দখলদার বাহিনী আটক ও অপহরণ করেছে।” এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট হয়, ভিডিওটি তার আটক হওয়ার পূর্বেই ধারণ করা হয়েছিল।

তবে ভিডিওটি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা শুরু হয়। শেখ হাসিনার সাবেক উপ-প্রেসসচিব মো. আশরাফুল আলম খোকন ভিডিওটির একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে প্রশ্ন তোলেন—“আটক করা হলে শহিদুল আলম কিভাবে ভিডিও রেকর্ড করে পোস্ট দিলেন?” একই প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকটি ফেসবুক পেজেও পোস্ট করা হয়, যা বাংলাফ্যাক্টের মতে ‘পরিকল্পিত বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ অংশ।

বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শহিদুল আলম যে কনশানস নামের জাহাজে ছিলেন, তার যাত্রীরা সত্যিই ইসরাইলি বাহিনী (Israeli Forces)-এর হাতে আটক হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা (Al Jazeera), অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (Associated Press), বিবিসি ও টাইমস অব ইসরাইল। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা এবং ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ উভয়ই আটকের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে।

ভিডিওটি পোস্ট করার প্রায় দুই ঘণ্টা আগেই শহিদুল আলম তার ফেসবুকে “Israelis approaching conscience” ক্যাপশনসহ ১ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের আরেকটি ভিডিও আপলোড করেন, যেখানে দেখা যায় ইসরাইলি নৌবাহিনী তাদের জাহাজের দিকে এগিয়ে আসছে। অর্থাৎ, তিনি পরিস্থিতি সম্পর্কে আগে থেকেই সচেতন ছিলেন এবং সম্ভাব্য আটক সম্পর্কে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।

শহিদুল আলমের ফেসবুক পেজে পরবর্তীতে জানানো হয়, তিনি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত পেজটি পরিচালনা করবেন Bangladesh Stands With Palestine এবং Free Shahidul আন্দোলনের কর্মীরা।

বাংলাফ্যাক্টের মতে, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়ন ও দমননীতির সমালোচনায় সোচ্চার থাকায় শহিদুল আলমকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এই প্রচারণা জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি করার উদ্দেশ্যেই চালানো হচ্ছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *