৭২+ বয়সে সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হলে, তা হবে দুঃখের বিষয়

“৭২ বছর বয়সে আমাকে যদি সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হয়, তা হবে গভীর দুঃখের বিষয়”—এই কথাটিই বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে নিজের ফেসবুক (Fawzul Kabir) পোস্টে আক্ষেপভরে লিখেছেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

সকালবেলার ওই পোস্টে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির জানান, উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই তাকে নিরলসভাবে কাজ করতে হচ্ছে। “গতকালও রাত আটটায় বাসায় ফিরেছি,”—উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিজের দায়িত্বে থেকে কোনো ধরনের অন্যায় সুবিধা গ্রহণ করেননি। আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুদের চাকরি বা ব্যবসা পাইয়ে দেওয়ার মতো কাজেও নিজেকে জড়াননি।

ফাওজুল কবির আরও লিখেছেন, “শিক্ষকতার সূত্রে, পূর্বে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার নিশ্চিত সুযোগ আমার ছিল। কিন্তু আমি সেই প্রলোভনে পা দিইনি। নিজের সীমিত সামর্থ্যের সর্বোচ্চটুকু ব্যবহার করে জনগণের প্রতি দায়িত্ব পালন করেছি।” সেখান থেকেই তার প্রশ্ন—এত কিছুর পরও যদি এই বয়সে ‘সেফ এক্সিট’ ভাবতে হয়, তাহলে তা নিঃসন্দেহে হৃদয়বিদারক।

তার এই পোস্টের পেছনে ইঙ্গিত রয়েছে এক প্রাক্তন উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতি, তবে সরাসরি সমালোচনা করতে রাজি হননি ফাওজুল কবির। তিনি লিখেছেন, “এই বিষয়টি উত্থাপনকারী, প্রাক্তন উপদেষ্টা ও বর্তমানে এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন। তিনি ‘জুলাই আন্দোলনের’ অগ্রসেনা এবং আমার শ্রদ্ধার পাত্র। তাই তার বক্তব্য নিয়ে আমার মন্তব্য করাটা শোভন হবে না। তাছাড়া আমি রাজনৈতিক বিষয়ে কখনো মন্তব্য করি না।”

হেলমেট বিতর্কে তার ব্যাখ্যা
সম্প্রতি তাকে এক মোটরসাইকেলে হেলমেট ছাড়া আরোহন করতে দেখা যাওয়ার বিষয়েও সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা হয়। এ নিয়ে ফাওজুল কবির তার পোস্টে লিখেছেন, “সাত-আট কিলোমিটার পথ আটকে থাকার পর বাধ্য হয়েই প্রথমে হেঁটে, পরে মোটরসাইকেলে রওনা দিতে হয়। কিন্তু খুঁজে দেখা যায়, অধিকাংশ চালক ও যাত্রীর কাছেই হেলমেট নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পর মাত্র একটি হেলমেট মেলে—সেটি পরে আমি যাত্রা শুরু করি।”

এই প্রসঙ্গে তিনি আরও যোগ করেন, হেলমেটবিহীন বাইকচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি পুলিশকে পরামর্শ দিয়েছেন এবং বিআরটিএ ও জেলা প্রশাসনকে এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন।

জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং নীতির প্রশ্নে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতেই উপদেষ্টার এই আবেগময় ফেসবুক পোস্ট—এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *