এনসিপি ‘কিংস পার্টি’, আওয়ামী লীগ ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’: ইশরাক হোসেন

বিএনপি (BNP) চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন (Engineer Ishraque Hossain) বলেছেন, এনসিপি যাদের নিয়ে গর্ব করতেন, আজ তারা রাজপথ ছেড়ে ক্ষমতার অংশীদার হয়ে ‘কিংস পার্টির’ মতো আচরণ করছে। রোববার (১২ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর গোপীবাগে বিএনপির শ্রমিক দলের এক সাংগঠনিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “যাদের আমি বিপ্লবী ভেবেছিলাম, তারা আজ ক্ষমতার দোসর হয়ে গেছে। এনসিপির একাংশ এখন আওয়ামী লীগের মতো লুটপাট, টেন্ডারবাজি, বদলিবাজিতে জড়িয়ে পড়েছে।” সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের আহ্বায়ক সুমন ভূঁইয়া।

জামায়াত ইস্যুতে ইশরাক বলেন, “আমরা তো একসঙ্গে রাজনীতি করেছি। অথচ আজ শুধু ক্ষমতার লোভে তারা এমন সব দাবি নিয়ে আসছে যা জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য। পিআর পদ্ধতি আসলে দেশ, জনগণ ও গণতন্ত্রের জন্য এক ভয়াবহ হুমকি।”

আন্দোলনের ইতিহাস টেনে তিনি বলেন, “৫ আগস্টের ঘটনার পর আমরা কিছু বিপথগামী নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছি। আমরা তো আন্দোলন করেছি ফুটপাত, বাজার বা বাসস্ট্যান্ড বানানোর জন্য নয়—আমরা লড়েছি মুক্তির জন্য। হাসিনার শাসনে মানুষের কথা বলার অধিকার ছিল না। মানুষের দম বন্ধ হয়ে আসত। এদের আচরণে মানুষ নিজেকে তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক ভাবত।”

আওয়ামী লীগের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ইশরাক বলেন, “আমি বিশ্বাস করি আওয়ামী লীগ এই দেশে আর রাজনীতি করতে পারবে না। তারা কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তারা একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা রাষ্ট্রবিরোধী কাজ করেছে এবং এখনও করে যাচ্ছে। তারা সাংগঠনিকভাবে গণহত্যা চালিয়েছে, মানুষ হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে দিয়েছে।”

তীব্র ভাষায় তিনি আরও বলেন, “আমরা খুনি হাসিনার শুধু বিচার নয়, ফাঁসি চাই। জনগণের বিরুদ্ধে এত অপরাধ করে কেউ রেহাই পেতে পারে না।”

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও ইশরাক কঠোর অবস্থান নেন। তিনি বলেন, “গত ১৭ বছর বাংলাদেশ ছিল না, এটা ছিল ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য। ৭১-এ দেশ স্বাধীন হলেও আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষকে দাসে পরিণত করেছিল। দিল্লি থেকেই ঠিক হতো এই দেশে কে নির্বাচন করবে, কাকে লুটপাটের সুযোগ দেওয়া হবে।”

শেষদিকে আন্দোলনের আত্মত্যাগ স্মরণ করে তিনি বলেন, “গত জুলাইয়ের আন্দোলনে রক্ত দিয়ে মানুষ স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ চেয়েছে। কেউ আত্মদান করেনি কে ক্ষমতায় আসবে সেটা ঠিক করার জন্য। তারা জীবন দিয়েছে অত্যাচার-অবিচারের বিরুদ্ধে। শহীদের রক্ত যেন ব্যর্থ না হয়, আমাদের নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে হবে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *