‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হলে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে,’—এমন মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের (G.M. Quader)। তিনি বলেন, “আমরাও চাই অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। কিন্তু সবার জন্য সমান সুযোগ না থাকলে সে নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে না।”
বুধবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও জাতীয় পার্টির অবস্থান নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জি এম কাদের বলেন, “দেশের বর্তমান অবক্ষয়ের একমাত্র রক্ষাকবচ হলো নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।” তার মতে, বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ নয়—তাই প্রয়োজন সরকার পরিবর্তন। তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করতে হবে এবং সেই সরকারের অধীনে আগামী তিন মাসের মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। এ সরকার যত দ্রুত বিদায় নেবে, দেশের জন্য ততই মঙ্গল।”
‘অশান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেলে বাংলাদেশই জিতত’
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনা করে জি এম কাদের বলেন, “শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার প্রচলন আছে, কিন্তু যদি অশান্তিতে নোবেল দেওয়া হতো, তবে নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশই সেই পুরস্কার অর্জন করত।”
পুলিশি বাধা ও সমাবেশ পণ্ডের অভিযোগ
গত ১১ অক্টোবর জাতীয় পার্টির কাকরাইল অফিসের সামনে আয়োজিত কর্মী সমাবেশ পণ্ড হওয়ার ঘটনাও তিনি তুলে ধরেন। জি এম কাদের অভিযোগ করে বলেন, “হঠাৎ কোনো উস্কানি ছাড়াই শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ জল-কামান দিয়ে পানি নিক্ষেপ শুরু করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছোড়া হয়, এরপর টিআর গ্যাস ছুড়ে সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করা হয়।”
তিনি বলেন, “নেতারা তখন প্রাণ বাঁচাতে দৌড়াতে থাকেন, আর পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। সরকারি বাহিনীর এই আচরণই প্রমাণ করে যে, এটি অন্তর্বর্তী সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন।”
‘সরকার পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, “সরকারের এমন পক্ষপাতমূলক আচরণ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে না। এই সরকার কোনো নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আয়োজন করতে চায় না। আমাদের মতো নিবন্ধিত দলের স্বাভাবিক, শান্তিপূর্ণ কর্মকাণ্ডে বাধাদানই তার প্রমাণ।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, এমরান হোসেন মিয়া, ইঞ্জিনিয়ার মাইনুল রাব্বি চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমসহ দলের অন্যান্য নেতারা।