আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলকে শক্ত অবস্থানে নিতে এনসিপি (NCP) মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে। দলীয়ভাবে যোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থীদের খোঁজ চালানোর পাশাপাশি এবার নজর দেওয়া হচ্ছে বিএনপি (BNP) এবং জামায়াতের মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের দিকে। বিশেষ করে সাবেক সংসদ সদস্য, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, এবং স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে দলটি।
প্রতিদিনই এসব নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে এবং অনেকেই এনসিপিতে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন দলটির একাধিক শীর্ষ নেতা। কেউ কেউ আবার নিজের পক্ষ থেকেই এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
দলের শীর্ষপর্যায়ের এক নেতা বলেন, “বিভিন্ন দলে যারা মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন এবং নির্বাচন করার ইচ্ছা রাখেন—তাদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। বিএনপির তরুণ নেতা ও সাবেক এমপিদের দিকে আমাদের বাড়তি নজর রয়েছে। পাশাপাশি অন্য দলের জনপ্রিয় নেতাদের সঙ্গেও আলাপ চলছে।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু রাজনৈতিক পরিচিতি নয়, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও স্থানীয় নেতৃস্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও আমাদের তালিকায় রয়েছেন। দলের শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলতে বিভিন্ন প্রোফাইল যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।”
ছাত্রদল (Chhatra Dal)-এর কেন্দ্রীয় এক নেতাও এনসিপির তৎপরতার কথা নিশ্চিত করেছেন। তার ভাষায়, “বিএনপির মনোনয়নে তরুণদের যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে ছাত্রদলের সাবেক জনপ্রিয় অনেক নেতার সঙ্গে এনসিপির যোগাযোগ বাড়ছে। এদের কেউ কেউ হয়তো এনসিপির হয়ে প্রার্থীও হবেন।”
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার স্পষ্ট করে জানান, “আমরা প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দিচ্ছি—জয়ের সক্ষমতা, ভালো ইমেজ এবং রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দক্ষতা। আমাদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি প্রাথমিকভাবে যাচাই করবে, তারপর মনোনয়ন বোর্ড চূড়ান্ত করবে প্রার্থী।”
তুষার আরও বলেন, “আমরা শুধু তরুণদের নয়, সব প্রার্থীর জন্যই সুযোগ রাখছি। যারা জনপ্রিয়, রাজনৈতিক ক্যালিবার রয়েছে এবং এলাকায় গ্রহণযোগ্য—তাদের সঙ্গে আমরা আলাপ করছি। অনেকেই নিজেরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন।”
এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন জানান, “আমরা পর্যায়ক্রমে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেব। প্রথম ধাপে প্রায় ১০০টি আসনে প্রার্থী ঘোষণার পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা সকলের জন্য উন্মুক্ত রেখেছি, তবে বিগত তিন নির্বাচনে অংশ নেওয়া, বিশেষ করে ২০২৪ সালের ‘আমি-ডামি’ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না।”
তার বক্তব্যে স্পষ্ট, “আওয়ামী লীগ (Awami League) কিংবা জাতীয় পার্টি (Jatiya Party)-র সঙ্গে যুক্ত কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এনসিপির নীতিমালায় এসব ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিই অনুসরণ করা হচ্ছে। তবে অন্যান্য দলে মনোনয়ন না পাওয়া কেউ যদি আমাদের মানদণ্ডে একমত হন, তাহলে তাদের জন্য দরজা খোলা রয়েছে।”


