বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল কাদের (Abdul Kader) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণকে ‘দ্বিমুখী’ ও ‘ভণ্ডামিপূর্ণ’ বলে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেছেন।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সকালে ফেসবুকে দেওয়া ওই পোস্টে তিনি লেখেন, “একটা দলের নেতারা দিনের বেলায় হাঁক-ডাক ছাড়ে, বিএনপিকে নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে; আর রাতের বেলায় বিএনপি নেতাদের বাসায় গিয়ে ধর্ণা দেয়!” কাদের দাবি করেন, কথিত ‘আপোষহীন’ এক নেতা এবং তাঁর ‘ইমাম সাহেব’ গত পনের দিনে ২০টি আসনের দাবিতে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন সাহেবের বাসায় তিনবার এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir)-এর বাসায় একবার বৈঠক করেছেন।
তিনি বলেন, “আসন সমঝোতায় ব্যাটার ন্যাগোসিয়েশনের কৌশল হিসেবেই উল্টাপাল্টা কথা বলছেন এই তথাকথিত আপোষহীন নেতা। আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলতে তুলতে আবার সেটাই গর্ব করে বলছেনও! অথচ গণ-অভ্যুত্থানের পরে তরুণদের সামনে রাখার কথা বলা হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ইমামরাই বিশটা সিটের জন্য দরবার করছেন!”
আব্দুল কাদের আরও লেখেন, “গালি দিয়ে আবার বাসায় গিয়ে বসে থাকেন, তারপরেও আসন মিলে না! বন্ধু বন্ধু বলে ব্ল্যাকমেইল করেন, দলের নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখতে চান। চাহিত আসন নিশ্চিত হলে তাদের আপোষহীনতার মুখোশ খুলে পড়ে যায়। কিন্তু কেউ স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে গেলেই তাকে ‘স্বপ্ন বিক্রেতা’ বলে আক্রমণ করা হয়।”
কাদের বলেন, দলের ভেতরে ‘মাইনাসের রাজনীতি’, ক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রবণতা ও কোরামবাজি এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে দলীয় কর্মীদের ঘুম ভাঙার সময় এসেছে। “যেই ২০ জনের জন্য সিট চাওয়া হয়েছে, সেই তালিকাটা এখন আর দিলাম না,” — এমন মন্তব্য করে কাদের তাঁর সমালোচনার তীব্রতা বাড়ান।
এই পোস্টের পরপরই রাজনৈতিক মঞ্চে আরও প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। বৈষম্যবিরোধী রাজনীতির আরেক নেতা আব্দুল্লাহ হিল বাকি (Abdullah Hil Baki) মন্তব্য করেন, “রাজনীতি হইলো একটা মজার খেলা। মাঝ রাতে এক টেবিলে মিটিং করে, সকালে গালি দেয়। আবার ফোন দিয়ে বলে, ভাই কিছু মনে কইরেন না—ওসব হইলো পলিট্রিক্স!”
বাকি আরও লেখেন, “আর মানুষ তালি দেয়, বলে—এই না হইলে বাপকা বেটা! সাহস আছে পোলার!” তার এই মন্তব্যে রাজনীতির অন্তরালের নাটকীয়তা ও দ্বিচারিতাকে ব্যঙ্গ করে উপস্থাপন করা হয়।
সামাজিক মাধ্যমে দুই নেতার এসব মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা ও কৌতূহল তৈরি করেছে। আসন বণ্টন, আপোষহীনতার মুখোশ এবং দলীয় স্বার্থের নামে যে রকম চালচিত্র উঠে এসেছে, তা রাজনৈতিক আদর্শ ও নীতিনৈতিকতার প্রশ্ন নতুন করে সামনে এনেছে।


