আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ও তাঁর দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে ঘোষিত রায়কে ‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দৃষ্টান্ত’ বলে আখ্যায়িত করেছে বিএনপি (BNP)। সোমবার রাতে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir) আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানান।
তিনি বলেন, “সারা বিশ্বের জনমত এবং বাংলাদেশের জনগণের দাবী ও প্রত্যাশা ছিল, যেন পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের মানবতাবিরোধী, নৃশংস ও গণহত্যার অপরাধের বিচার হয়। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ঘোষিত এই রায় সহস্রাধিক শহীদের আত্মাকে শান্তি দেবে এবং তাদের পরিবার-পরিজনের ক্ষোভ কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে।”
এদিন দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার (Golam Mortuza Mojumdar)-এর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (Asaduzzaman Khan Kamal)-কে মৃত্যুদণ্ড দেন। মামলার আরেক অভিযুক্ত, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন (Chowdhury Abdullah Al-Mamun)-কে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, “দীর্ঘ ১৬ বছরের গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার এবং ২০২৪ ছাত্র গণঅভ্যূত্থানে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার হাজারো মানুষের প্রতি এই রায় ন্যায়বিচারের প্রতিফলন।”
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। শত সহস্র বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী, নারী-শিশু, ছাত্র, শ্রমিকসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ গুম, খুন, নির্যাতন ও দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। অবশেষে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিস্ট শাসনের পতন ঘটেছে।”
তিনি বলেন, “আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বিএনপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দল হিসেবে আমরা চাই, অন্যান্য মামলায় অভিযুক্তদেরও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে সুবিচার হোক।”
বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)। অংশ নেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।


