জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় তিন হাজার ১৮৫ কোটি টাকা আ’\ত্ম’\সাৎয়ের অভিযোগে শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদসহ মোট ৬৮ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মা’\মলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। একটি মা’\মলায় ৩২ জন এবং অন্যটিতে ৩৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়ে মা’\মলা দুটি করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রামে দুদকের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ। তার ভাষ্য অনুযায়ী, দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়ে সুদে-আসলে বিপুল অঙ্কের অর্থ আ’\ত্ম’\সাৎয়ের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার পর এই মা’\মলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
একটি মা’\মলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে জনতা ব্যাংক (Janata Bank) থেকে ২০০৯ সালের ২৫ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৬ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ঋণ গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে সুদসহ সেই অর্থ পরিশোধ না করে মোট দুই হাজার ৩২ কোটি ৩০ লাখ ৪৫ হাজার ৯১৮ টাকা ৪০ পয়সা আ’\ত্ম’\সাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ আনা হয়।
এই মা’\মলায় এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ (Saiful Alam Masud)-কে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে আসামি করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরিচালক আব্দুল্লাহ হাসান, সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল আলমসহ গ্রুপের একাধিক পরিচালক এবং জনতা ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অন্য মা’\মলায় অভিযোগ করা হয়েছে, এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডের নামে ২০০৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ৬ মার্চ পর্যন্ত ঋণ গ্রহণ করে এক হাজার ১৫২ কোটি ৫১ লাখ ১৪ হাজার ১০৭ টাকা আ’\ত্ম’\সাৎ করা হয়েছে। ওই মা’\মলায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক শাহানা ফেরদৌস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিসকাত আহমেদ এবং জনতা ব্যাংকের দুজন কর্মকর্তাসহ মোট ৩৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগেও এস আলম গ্রুপ ও এর সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে একাধিক আইনি পদক্ষেপ নেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (Anti-Corruption Commission)। গত ৯ জুলাই সাইফুল আলম ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে থাকা ৫৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়। একই বছরের ২৪ জুন বিদেশে থাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।
এ ছাড়া ১৭ জুন ১৮০ কোটি টাকার জমি ক্রোক এবং ১৪ জানুয়ারি গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরা ও বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ ক্রোকের পাশাপাশি ৬৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। গত বছরের ৭ অক্টোবর এস আলম, তার স্ত্রী, সন্তান, ভাইসহ মোট ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও জারি করেন আদালত।


