মাত্র ১৩ বছর বয়সে দেশ ছাড়তে হয়েছিল তাকে—কারণ একটাই, তিনি তারেক রহমান (Tarique Rahman) ও খালেদা জিয়া (Khaleda Zia)–র ঘনিষ্ঠ পরিজন। সেই কিশোরী জাইমা রহমান এখন ৩০ বছরের এক পরিপূর্ণ নারী। এক দশকেরও বেশি সময় পর, দীর্ঘ নির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৫ ডিসেম্বর বাবার সঙ্গেই একই ফ্লাইটে বাংলাদেশে ফিরছেন তিনি।
বিচার কিংবা দোষ নয়—তাকে দেশ ছাড়তে হয়েছিল শুধুমাত্র রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে। শৈশবের পাঠশালা, খেলার মাঠ, বন্ধুত্বের সম্পর্ক—সব কিছু পেছনে ফেলে চলে যেতে হয়েছিল এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে।
আজ, সেই জাইমা রহমান ব্রিটেনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জনের পর ২০১৯ সালে ‘Call to the Bar’ সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে তিনি একটি স্বনামধন্য ব্রিটিশ ল’ ফার্মে কর্মরত। তার চলন, ভাষা, ব্যক্তিত্ব—সবই প্রকাশ করে এক আত্মস্থ ও আত্মবিশ্বাসী প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব।
যদিও এখনো বিএনপির রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হননি, তবে সম্প্রতি দলের সাইবার টিমের সঙ্গে একটি অনলাইন বৈঠকে তার উপস্থিতি এবং দিক-নির্দেশনা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দৃষ্টি কেড়েছে। অনেকেই মনে করছেন, রাজনৈতিক বোধ এবং কৌশলগত উপলব্ধির দিক থেকে জাইমা রহমান উপেক্ষার মতো কোনো চরিত্র নন।
এই ফেরা শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক কোনো প্রত্যাবর্তন নয়। এটি একান্ত ব্যক্তিগত, আবেগঘন, আর হৃদয়ের টানেই নির্মিত একটি অধ্যায়। এমনকি তিনি তার প্রিয় বিড়াল ‘জেবু’কেও সঙ্গে আনছেন—আর এ সিদ্ধান্তই যেন বলে দেয়, এ দেশে ফিরে আসাটা তার হৃদয়ের আকাঙ্ক্ষা।
শৈশবে যে দেশ তাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল, সেখানেই ফিরছেন তিনি আজ এক নতুন পরিচয়ে—একজন আন্তর্জাতিক মানের আইনজীবী, এক বলিষ্ঠ প্রজন্মের প্রতীক, এবং নির্বাসিত পরিচয় ছাপিয়ে আত্মমর্যাদার নতুন মুখ।


