সিলেটের নয়াবাজারে খ্রিস্টান প্রেস বিটারিয়ান চার্চের জমির একাংশ দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে মেডিকেল কলেজ। সিলেট উইমেন্স কলেজ হাসপাতাল নামের এ প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রণ করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ প্রতিষ্ঠানে তার ব্যবসায়িক অংশীদার হলেন কাতার আওয়ামী লীগের নেতা নুরুল ইসলাম খান। অনুসন্ধানে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
হলি সিলেট হোল্ডিং লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদে ১৭ জন পরিচালক রয়েছেন। তাদের একজন ডা. শফিকুর রহমান। তিনি এক সময় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক চাপে তিনি চেয়ারম্যানের পদ ছাড়েন।
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, পরিচালকরা মেডিকেল কলেজটির ৯৬ শতাংশ শেয়ারের মালিক। পরিচালকদের একজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম। তবে এই মুহূর্তে নুরুলের দলীয় পদ নেই।
সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেনও এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক। এই দুইজন বাদে বাকি পরিচালকরা জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে যুক্ত। সিলেট মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ফখরুল ইসলামও উইমেন্স মেডিকেলের পরিচালক।
সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি তিন একর জমিতে অবস্থিত। এরমধ্যে ৬৫ শতাংশ জমি খ্রিস্টান চার্চের বলে অভিযোগ রয়েছে।
চার্চের পূর্বপাশের এ জমি দখল করে মেডিকেল কলেজ সম্প্রসারণ করেন ডা. শফিকুর রহমান। আওয়ামী লীগ শাসনামলে তিনি রাজনৈতিক চাপে পড়ে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের পদ ছাড়েন। তবে প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ টিকিয়ে রাখতে যুক্ত করেন আওয়ামী লীগ নেতাদের। এক্ষেত্রে সিলেটের সাবেক মেয়র ও প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা বদরুদ্দিন কামরানের সমর্থন পান জামায়াত নেতারা।
চার্চের জমি বিক্রির নজির না থাকলেও মেডিকেল কলেজের পরিচালকদের ভাষ্য সস্পত্তিটি কেনা। চার্চ সূত্র জানিয়েছে, ১০ লাখ টাকা দিয়ে জোর করে জমিটি নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন বলেন, ‘শুধু জামায়াত আমির নন, অনেকে রয়েছেন হাসপাতালের পরিচালনায়। চার্চের কাছ থেকে জমি কিনে মেডিকেল কলেজ সম্প্রসারণ করেছেন।’
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জমি কীভাবে কিনেছেন, এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি এমদাদ হোসেন। তিনি জানান, হলি সিলেট হোল্ডিং লিমিটেডের জমিতে মেডিকেল কলেজ নির্মিত হয়েছে। আর নুরুল ইসলাম আওয়ামী লীগ সমর্থক মাত্র, নেতা নন।
সূত্র:দ্য মিরর এশিয়াকে