বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক সংসদ সদস্য, এবং সাবেক মৎস্য ও খাদ্য মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
তিনি মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যু সংবাদটি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক যুগ্ম সচিব কাদের গনি চৌধুরী নিশ্চিত করেছেন।
কাদের গনি চৌধুরী তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন, “নোমান ভাই আর নেই। বীর চট্টলার কৃতি সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী এবং আমার রাজনৈতিক অভিভাবক জননেতা জনাব আবদুল্লাহ আল নোমান আজ ভোর ৬টায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মহান আল্লাহ তাঁকে সকল ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন, আমীন।”
রাজনৈতিক ও পেশাগত জীবন
আবদুল্লাহ আল নোমান ১৯৯১ সালে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী আসন থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই বছরের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে, ২০০১ সালের নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
রাজনৈতিক জীবন ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ
ষাটের দশকের শুরুতে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক পথচলা শুরু হয়। এসময় তিনি ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দেন এবং মেননপন্থী ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক, বৃহত্তর চট্টগ্রামের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ছাত্রজীবন শেষে তিনি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে শ্রমিক রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং পূর্ববাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একইসঙ্গে তিনি গোপনে ভাসানীপন্থী ন্যাপের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন এবং ১৯৭০ সালে ন্যাপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হন।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ শেষে ন্যাপের রাজনীতিতে পুনরায় যুক্ত হন এবং পরবর্তী সময়ে ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে (বিএনপি) যোগদান করেন।
জননেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর অবদান বাংলাদেশি রাজনীতিতে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।