চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় সংঘটিত এক মর্মান্তিক ঘটনায় গণপিটুনির শিকার হয়ে দুইজন নিহত হয়েছেন। স্থানীয়দের ভুল তথ্য ও উত্তেজনার ফলে সংঘটিত এ ঘটনা সমাজে ক্রমবর্ধমান মব ভায়োলেন্সের (জনতার ন্যায়বিচার) ভয়াবহ দিকটি উন্মোচন করেছে।
কী ঘটেছিল সাতকানিয়ায়?
যমুনা টিভির (Jamuna TV) প্রতিবেদনে একজন জামায়াত সমর্থক জানান,, সাতকানিয়ায় জামায়াত সমর্থিত কয়েকজন ব্যক্তি একটি স্থানে একত্রিত হন। স্থানীয়রা তাদের দেখে সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং মাইকিং করে ডাকাত এসেছে বলে ঘোষণা দেন। এরপর উত্তেজিত জনতা তাদের ওপর হামলা চালায়, যার ফলে দুইজন ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে যে, নিহতদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল এবং তাদের গুলিতে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হয়েছেন। তবে এটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে তারা প্রকৃতপক্ষে ডাকাত ছিল নাকি শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে হামলার শিকার হয়েছেন।
গণপিটুনির ভয়াবহতা ও সামাজিক অস্থিতিশীলতা
ধরা যাক, সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা সত্যিই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু সেটি কি তাদের হত্যা করার বৈধতা দেয়? আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা সমাজের জন্য একটি ভয়ংকর বার্তা বহন করে।
গণপিটুনি বা মব জাস্টিস সমাজে ভয় ও অনিশ্চয়তা তৈরি করে। এটি কেবল সন্দেহভাজনদের জীবনই কেড়ে নেয় না, বরং এটি যে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তির জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। আজ যারা এর সমর্থক, কাল হয়তো তারাই এই সহিংসতার শিকার হতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনের কঠোর প্রয়োগ প্রয়োজন। রাষ্ট্র ও সমাজকে একসঙ্গে কাজ করে মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু আর না ঘটে।
আরো পড়ুন
সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে নিহত ২ জামায়াত সমর্থক
মতমাতটি রাশেদ খানের ফেসবুক পোষ্টের অনুকরনে লেখা