নারীর সমতায়ন এখন সর্বপ্রথম এজেন্ডা হওয়া উচিত

বিএনপি (BNP)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) বলেছেন, বৈশ্বিক শান্তি, নিরাপত্তা, মানবাধিকার ও টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে নারীর অধিকার অপরিহার্য। নারীরা যেন অবহেলা, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার না হয় এবং ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে সবার সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।

নারী দিবসে তারেক রহমানের বাণী

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (৭ মার্চ) রাতে এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন। আগামীকাল শনিবার (৮ মার্চ) বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত হবে। এ উপলক্ষে তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান এবং তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।

নারী উন্নয়নে বিএনপির ভূমিকা

তারেক রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবস নারীদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরে এবং তাদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনে সচেতনতা সৃষ্টি করে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, তাই তাদের উন্নয়ন ছাড়া জাতির সার্বিক অগ্রগতি সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান (Ziaur Rahman) নারীর অধিকতর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তার ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়া (Khaleda Zia)-র সরকার নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছিল এবং নারীশিক্ষার প্রসারের জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল।

নারীশিক্ষা ও ক্ষমতায়নে বিএনপির অবদান

তারেক রহমান উল্লেখ করেন, খালেদা জিয়ার শাসনামলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হার ৯৭ শতাংশে উন্নীত হয় এবং ছাত্রীদের শিক্ষাবৃত্তির আওতায় আনা হয়। স্কুলে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠিত হয়।

তিনি আরও বলেন,

  • মেয়েদের জন্য দুটি নতুন ক্যাডেট কলেজ ও তিনটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়।
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় চট্টগ্রামে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (Asian University for Women) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
  • একটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়।
  • নারী শিক্ষার প্রসারের জন্য ব্যক্তি খাতে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেওয়া হয়।

নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন

তারেক রহমান বলেন, নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে গ্রামীণ এলাকায় মাধ্যমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক করা হয় এবং দেশব্যাপী উপবৃত্তি কর্মসূচি চালু করা হয়। এর ফলে নারীদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায় এবং তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পায়।

এছাড়া,

  • স্বাক্ষরজ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে পৃথক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
  • ১৯৯৩ সালের ১ জুলাই থেকে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়।
  • দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে শিক্ষা অর্জনে আগ্রহী করতে ‘শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য’ কর্মসূচি চালু করা হয়।

নারীর উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান বিশ্বে নারীর অংশগ্রহণ ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। বদলে যাওয়া কর্মপরিবেশে নারীর সরব উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, “আজকের এই শুভ দিনে আমি নারী সমাজের উন্নয়ন ও কল্যাণে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাই। এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’-এর সফলতা কামনা করছি।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *