২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক রহমানসহ সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল

আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ (Awami League) সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মামলায় তারেক রহমান (Tareq Rahman)সহ সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। আজ বুধবার (১৯ মার্চ) সকালে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় (Attorney General’s Office) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, আপিলের শুনানি আজই হতে পারে।

হাইকোর্টের পূর্বের রায়

এর আগে বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান (AKM Asaduzzaman) ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেন (Syed Enayet Hossain) এর হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছিলেন। এর আগে ২১ নভেম্বর আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানি শেষ হয়।

বিচারিক আদালতের রায়

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালত এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর (Lutfozzaman Babar) ও বিএনপি (BNP) নেতা আব্দুস সালাম পিন্টু (Abdus Salam Pintu)সহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন।

মামলার পটভূমি

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ (Bangabandhu Avenue) এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত এবং প্রায় ৪০০ জন আহত হন। ওই ঘটনার পর মতিঝিল থানা (Motijheel Police Station) এলাকায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা করা হয়।

২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে মামলার নতুন করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ২০০৮ সালে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) (CID) ২২ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেয়। এতে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছিল। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে মামলার অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

আসামিপক্ষের যুক্তি

আসামিপক্ষের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহজাহান শুনানিতে জানান, মামলার দ্বিতীয় অভিযোগপত্র আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ এটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে না দিয়ে সরাসরি জজ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। এছাড়া উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশের আদালতের নজির অনুসারে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, তাদের খালাস পাওয়া উচিত। বিশেষ করে তারেক রহমান ও কায়কোবাদ আপিল না করায় তাদেরও নির্দোষ সাব্যস্ত করা যেতে পারে বলে মত দেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির (Mohammad Shishir Monir) বলেন, মুফতি হান্নান (Mufti Hannan) এর দ্বিতীয় জবানবন্দির ভিত্তিতে অধিকতর তদন্ত করা হয়েছে, যার আইনি ভিত্তি নেই। তিনি দাবি করেন, নির্যাতনের মাধ্যমে আসামিদের স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই সাজা প্রদান করা হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *