গাজা বিক্ষোভে লুটপাট-ভাঙচুর নিয়ে বিরক্ত প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান যা বললেন

রোহিঙ্গা সংকটকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার সঙ্গে তুলনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান (Dr. Khalilur Rahman)। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের ঘাড়ের ওপর একটি গাজা বসে আছে। সেটি নিয়ে কারো মিছিল-মিটিং নেই।’

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি (Foreign Service Academy)-তে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ড. খলিলুর রহমান বলেন, গাজাতে ইসরায়েলি বর্বরতায় সারা বিশ্বব্যাপী যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, তার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক। তবে সবচেয়ে বেদনাদায়ক বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশ নিজেই একটি জটিল সংকটে আছে—রোহিঙ্গা সংকট। “আমাদের ঘাড়ের ওপর একটি গাজা বসে আছে—রোহিঙ্গা। সেটা নিয়ে কারো মিটিং-মিছিল নেই, আলোচনা নেই,” বলেন তিনি।

ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে

তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন চলাকালীন ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের নামে কিছু তরুণ বহুজাতিক কোম্পানির আউটলেটে হামলা চালিয়েছে। এতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তার ভাষ্য, “একটা জিনিস লক্ষ করছি, যখনই আমরা ভালো কিছু করতে যাচ্ছি, তখনই হঠাৎ নানা সমস্যা তৈরি হয়। মনে হচ্ছে, আমাদের ভালো উদ্যোগগুলোকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হচ্ছে। এটা যেন একটা ধারাবাহিক প্যাটার্ন।”

‘রোহিঙ্গা কম মুসলমান?’

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্নের মুখে পড়ার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে ড. খলিলুর রহমান বলেন, “আমার ঘাড়ের ওপর একটা সমস্যা বসে আছে। নাকি রোহিঙ্গারা একটু কম মুসলমান? আর অন্যরা একটু বেশি মুসলমান? আমাদের খুব লজ্জা লাগে যখন বিদেশে জিজ্ঞাসা করা হয়—আপনাদের দেশে রোহিঙ্গাদের নিয়ে তো কোনো কথাবার্তা নেই?”

তিনি সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমাদের অগ্রাধিকার আমাদের বুঝতে হবে। বাইরের কথা নিশ্চয়ই বলবেন, আলাপ করবেন। কিন্তু ঘরের সমস্যার কথা আগে বলুন। তা না হলে আমরা দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে পারব না।”

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক দায়িত্ব

তিনি আরও বলেন, “পৃথিবীর নির্যাতিত মানুষের পাশে থাকবে বাংলাদেশ। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় বিশ্বের নির্যাতিত মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এখন সেই ঐতিহাসিক দায় আমাদের পালন করতে হবে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *