নাজমুল আহসান (Nazmul Ahsan), প্রবাসী সাংবাদিক ও বুলমবার্গের একজন কনট্রিবিউটর, তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নির্বাচন এবং বিরোধী রাজনীতির জটিলতা নিয়ে এক তীক্ষ্ণ মতামত প্রকাশ করেছেন।
তিনি লেখেন, যারা নির্বাচন-বিরোধী অবস্থান নিয়ে জোর গলায় আওয়াজ তুলছেন, তারা হয়তো বুঝতে পারছেন না তারা ঠিক কতটা বিপজ্জনক খেলায় নেমেছেন। কারণ এতে রাজনৈতিক এবং কৌশলগতভাবে তারা আম এবং ছালা—দুটোই হারাতে পারেন।
আহসান স্মরণ করিয়ে দেন, বিএনপির সঙ্গে টানাপোড়েনের ইতিহাসে যারা একের পর এক ব্যাকফুটে গেছেন, তারা এবার stakes আরও বেশি এবং জনপ্রিয়তা আরও কমে যাওয়া অবস্থায় কীভাবে ভিন্ন ফল আশা করছেন? তার ভাষায়, “যেই কলা গিলতে পারবেন না, সেটা গিলতে গেলে কিন্তু খাওয়া তো দূরের কথা, গলায় আটকেই মরেই যাবেন।”
ভবিষ্যতের দিকেও আঙুল তোলেন তিনি। যদি এই দল নির্বাচনবিরোধী অবস্থানে যায় এবং শেষ পর্যন্ত হার মানে, তবে বিএনপি নির্বাচনে না এলেও তাদের জবাব দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। বরং তখন বিএনপির বুদ্ধিজীবীরাই বলতে পারেন, “নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্র আসে না, আসে লুটেরা শ্রেণী।” তখন দ্বিচারিতার জবাব কীভাবে দেবেন?
আওয়ামী লীগ (Awami League) বনাম বিএনপির আন্দোলন তুলনা করে আহসান বলেন, জনগণ তখন বিএনপির আন্দোলনে সাড়া দেয়নি, কারণ তারা মনে করেছিল এটি কেবল ক্ষমতার লড়াই—যেখানে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের কারণ নেই। একইভাবে, যদি অন্য কোনো পক্ষ জনগণের আস্থা অর্জন না করে শুধুই লড়াইতে নামে, তাহলে তারাও জনগণের কাছে বিএনপির মতোই মনে হতে পারে।
তার পরামর্শ, “স্ট্যান্ডঅফ তখনই নেবেন, যখন আপনার জেতার সম্ভাবনা বেশি।” ২০১৪ সালের উদাহরণ টেনে আনেন তিনি, যেখানে বিএনপি শেখ হাসিনার নির্বাচনী প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে আন্দোলনে গিয়েছিল, আর তাতে ব্যর্থ হয়ে পরে ২০১৮-তে বাধ্য হয়েই শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচনে অংশ নেয়।
সুতরাং, আজ যারা “নির্বাচনের বাইরে গিয়ে” লড়াই করতে চান, তাদের মনে রাখা উচিত—এই পথে হেরে গেলে ভবিষ্যতে বার্গেইনিং পাওয়ারও হারাতে হবে। এবং এখন পর্যন্ত জনগণের স্বীকৃতি অর্জনের সবচেয়ে কার্যকর উপায় একটিই—নির্বাচন।
আহসানের শেষ পরামর্শ ছিল স্পষ্ট—“খামোখা নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েন না।”