জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় ১২ নেতার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারির জন্য আবেদন করেছে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (National Central Bureau)। এ তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)সহ সাবেক মন্ত্রিসভার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।
শনিবার পুলিশ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়, বিদেশে পলাতক অবস্থায় থাকা অভিযুক্তদের ফিরিয়ে আনতে তিনটি ধাপে ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করেছে এনসিবি। প্রত্যেক ধাপে আলাদা করে অভিযুক্তদের নাম ও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়েছে।
জানানো হয়েছে, এই আবেদনগুলো এসেছে সেই আলোচিত ‘জুলাই-আগস্ট গণহত্যা’ মামলার প্রেক্ষাপটে, যা সম্প্রতি নতুন করে আলোচনায় এসেছে দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। এনসিবির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘বিচার প্রক্রিয়াকে গতিশীল ও আন্তর্জাতিক সহায়তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ।’
অভিযোগের তালিকায় যাদের নাম রয়েছে, তারা সবাই আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের নেতা বা সাবেক সরকারি উচ্চপদস্থ ব্যক্তি। তাদের মধ্যে রয়েছেন:
- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের (Obaidul Quader)
- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান
- সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক
- সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
- সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক
- সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী
- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (DSCC) সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস
- সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক
- সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ
- সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত
- সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ (Benazir Ahmed)
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই রেড অ্যালার্ট জারি হলে অভিযুক্তদের যেকোনো দেশে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করা সহজতর হবে, এমনটাই আশা করছে বাংলাদেশ পুলিশ। তবে এ বিষয়ে ইন্টারপোল এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং এর রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রভাবও ব্যাপক হতে পারে। আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি এখন এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয় ইন্টারপোল—সেদিকেই।