আলোচিত ইউটিউবার ও স্বঘোষিত অভিনয়শিল্পী হিরো আলম (Ashraful Hossen Alom)-এর বিরুদ্ধে এবার উঠেছে গুরুতর অভিযোগ। বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ এক নারীর দায়েরকৃত মামলায় তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ, শারীরিক নির্যাতন এবং গর্ভপাত ঘটানোর মতো ভয়াবহ অভিযোগে আসামি করা হয়েছে।
রোববার (৪ মে) দুপুরে সাদিয়া রহমান মিথিলা নামে ওই নারী এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় হিরো আলম ছাড়াও তার মেয়ে আলো বেগম, ব্যক্তিগত সহকারী আল আমিন, মালেক ও তার স্ত্রী জেরিন এবং আহসান হাবাবী সেলিমকে আসামি করা হয়েছে।
বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আনোয়ারুল হক। তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মামলাটি পাঠানো হয়েছে বগুড়ার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর পুলিশ সুপারের কাছে।
কী অভিযোগ উঠেছে?
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, হিরো আলম অভিনয়ের সুযোগ করে দেওয়ার আশ্বাসে মিথিলাকে আকৃষ্ট করেন। এরপর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন। একপর্যায়ে এক মৌলভিকে ডেকে এনে ‘কবুল’ পড়িয়ে তাকে স্ত্রী রূপে গ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে একসঙ্গে বসবাস শুরু করেন।
এই সময় বাদীর কাছ থেকে শর্ট ফিল্ম বানানোর কথা বলে ১৫ লাখ টাকা ধার নেন হিরো আলম। এরপর যখন বাদী তাকে কাবিন নামা করার জন্য চাপ দেন, তখন পরিস্থিতি মোড় নেয় ভয়ঙ্কর দিকে।
গর্ভপাত ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ
বাদী জানান, ১৮ এপ্রিল হিরো আলম তাকে বগুড়ার এক বাড়িতে নিয়ে যান এবং সেখানে গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে বলেন। তিনি রাজি না হওয়ায় ২১ এপ্রিল অন্যান্য আসামিরা তাকে মারধর করেন। এতে তার প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ শুরু হয় এবং সেদিনই শহরের একটি ক্লিনিকে তাকে ভর্তি করা হয়, যেখানে তার গর্ভপাত ঘটে।
পরে ২৪ এপ্রিল তাকে ভর্তি করা হয় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, এবং ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
হিরো আলমের প্রতিক্রিয়া
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে হিরো আলম সাফ জানিয়ে দেন, “আমি ওই নারীকে চিনি না। আমাকে হয়রানি করতে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, অতীতে নানা বিতর্কের জন্ম দেওয়া হিরো আলমকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তবে এই মামলার রায় কী হয় এবং তদন্তে কী উঠে আসে, তা সময়ই বলে দেবে।