জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)–এর স্ত্রী জোবাইদা রহমান (Zubaida Rahman) হাইকোর্টে আপিল করার অনুমতি পেয়েছেন। মঙ্গলবার (১৩ মে) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক বেঞ্চ ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনার আবেদন গ্রহণ করে এই আদেশ দেন।
আদালতে জোবাইদা রহমানের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এস এম শাহজাহান ও কায়সার কামাল। দুর্নীতি দমন কমিশনের (Anti-Corruption Commission – ACC) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।
শুনানি শেষে কায়সার কামাল জানান, “ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসরণ করে বিলম্ব মার্জনার আবেদন করা হয়েছিল। হাইকোর্ট সেটি গ্রহণ করেছেন। এখন নিয়ম মেনে আপিল দায়ের করা হবে।”
২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় জোবাইদা রহমান, তারেক রহমান এবং এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন। ২০০৮ সালে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তারেক রহমানকে দুটি ধারায় ৯ বছরের এবং জোবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
তবে গত ২২ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে জানানো হয়, জোবাইদা রহমানের সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পাড়ি জমান জোবাইদা রহমান। দীর্ঘ ১৭ বছর পর চলতি বছরের ৬ মে খালেদা জিয়া (Khaleda Zia)–র সঙ্গে দেশে ফিরে আসেন তিনি। দেশে ফিরে আপিলের প্রস্তুতি হিসেবে বিলম্ব মার্জনার আবেদনটি করেন, যা আজ আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে এবং অনুমোদন পায়।
আইনি বিশ্লেষকদের মতে, এই আদেশের ফলে জোবাইদা রহমানের সাজা নির্ধারণ নিয়ে নতুন আইনি অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। এদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিষয়টি বিএনপির জন্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।