অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam) সামাজিক মাধ্যমে এক আবেগঘন বার্তায় তার পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনের সংকট তুলে ধরেছেন। শনিবার তার ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-র শাসনামলে তার লেখালেখি ও অবস্থানকে যারা একসময় সমর্থন জানাতেন, এখন তারাই তাকে ছেঁটে ফেলছেন। কেউ তাকে ‘আনফ্রেন্ড’ করছেন, কেউবা আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করছেন।
শফিকুল জানান, তার স্ত্রী তাকে ইতোমধ্যেই সতর্ক করে বলেছেন, “যখন তুমি পদত্যাগ করবে, তখন তুমি একা হয়ে যাবে।” এই ভবিষ্যদ্বাণী তাকে ভাবিয়ে তুলেছে। তবুও, নিজের অবস্থান থেকে তিনি সরে আসেননি।
তিনি স্মরণ করেন, এক সময় তিনি বিরোধী রাজনীতিবিদদের পক্ষ নিয়ে লেখালেখি করতেন—যারা দেশে গণতন্ত্র ও পরিবর্তনের আশা জাগিয়েছিলেন। সে সময় তার আত্মীয়রা তার লেখাকে গর্বের সঙ্গে শেয়ার করতেন। কিন্তু এখন দৃশ্যপট বদলে গেছে। সরকারে একটি সংবেদনশীল ভূমিকা গ্রহণ করার পরই এক সময়ের শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাকে থেকে সরে গেছেন।
শফিকুল লিখেছেন, “অনেকের চোখে আমি অহংকারী, অসহিষ্ণু, এবং একটি ক্ষমতার স্থানে থাকা একজন কর্মকর্তা। অথচ আমি চেষ্টা করেছি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে, যাতে কারো ক্ষতি না হয়।”
তার ভাষায়, সাংবাদিকতা জীবনে বহুবার একা লড়াই করেছেন—বিহারিদের অধিকার কিংবা জাতীয় ট্রাজেডির মুহূর্তে ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। “সেই সময়ও আমি একা ছিলাম,” তিনি লিখেছেন, “এখনও যদি একা হতে হয়, আমি তা মেনে নেব।”
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতা একটি এমন প্রলোভন, যা মানুষকে দুর্নীতির দিকে ঠেলে দেয়। সেই চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করে নিজেকে সৎ রাখার চেষ্টা করেছেন তিনি।
সবশেষে, শফিকুল আলম জানান, কয়েক মাস পর যখন তিনি পদত্যাগ করবেন, তখন অতীতের দিকে ফিরে তাকিয়ে গর্ববোধ করবেন। কারণ, নিজের দায়িত্ব তিনি যথাযথভাবে পালন করেছেন বলে দৃঢ় বিশ্বাস তার। “একদিন যদি একাকীত্ব আসে,” তিনি লেখেন, “তবু ইতিহাসের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব—এই আত্মবিশ্বাসই আমার শক্তি।”