আসিফের সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেমের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা, এনআইডি ব্লক করছে দুদক

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (Asif Mahmud Sajib Bhuiyan)-এর সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগে তার বিদেশযাত্রা নিষিদ্ধ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন—দুদক (ACC)। একইসঙ্গে তার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) ব্লক করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (২৪ মে) দুদকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে, মোয়াজ্জেমের বিদেশগমন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ইতিমধ্যে নেওয়া হয়েছে। এর আগে, ২২ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে দুদকের উপসহকারী পরিচালক মিনু আক্তার সুমি (Minu Akter Sumi)-এর নেতৃত্বে একটি দল তাকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

প্রভাবশালী পদে থেকে টেন্ডার বাণিজ্য ও তদবিরের মাধ্যমে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে। যদিও তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেছেন, “আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ছাত্রদের টার্গেট করে একটি পক্ষ মিথ্যা ছড়াচ্ছে।”

মোয়াজ্জেম আরও জানান, “আমি নিজেই দুদকের ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছি। কিছু গণমাধ্যমে আমার পদত্যাগ নিয়ে ভুল তথ্য এসেছে। আমি বিসিএস ভাইভার প্রস্তুতির জন্য ২৫ মার্চ পদত্যাগ করি, এবং সেই আবেদনের ভিত্তিতে আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।” তিনি আরও বলেন, “দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে আমার পদত্যাগের পরপরই।”

জানা গেছে, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ২২ এপ্রিল পদত্যাগ করেন। এরপর ২৫ এপ্রিল উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব নিজেই গণমাধ্যমকে জানান, তার সাবেক এপিএসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে দুদককে তদন্তের অনুরোধ করেছেন।

এর মধ্যেই ২৭ এপ্রিল যুব অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ‘মার্চ টু দুদক’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে মিছিল করে দুদক কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেন। তারা স্থানীয় সরকার ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টাদের এপিএস ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত দাবি করেন।

একই দিন তিনজন আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট থেকে মোয়াজ্জেম হোসেন (Moazzem Hossain) এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বর্তমান ও সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ এনে দুদকে অনুসন্ধানের আবেদন করেন।

এই আবেদনের ভিত্তিতেই দুদক তলব পাঠায়। এর প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম (Nurjahan Begum)-এর সাবেক পিও তুহিন ফারাবি ও বর্তমান পিও ডা. মাহমুদুল হাসান দুদকে হাজির হন। যদিও তাদের ডাক ছিল মঙ্গলবার, তারা একদিন পর বুধবার দুদকে যান।

এদিকে, একই দিনে জাতীয় নাগরিক পার্টির সাবেক যুগ্ম সদস্যসচিব এ বি এম গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীর (ABM Gazi Salauddin Ahmed Tanvir)-কেও জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। তার বিরুদ্ধেও রয়েছে কমিশন বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ।

এই ঘটনায় সরকারের উপদেষ্টাদের চারপাশে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন করে আলোচনায় এসেছে, যা প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *