জাতীয় রাজনৈতিক অচলাবস্থা এবং সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধের আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া (Begum Khaleda Zia)-কে জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ্ (Dr. Mahbub Ullah)। তিনি বলেন, জাতির এই সঙ্কটময় মুহূর্তে বেগম জিয়া যদি পক্ষগুলোর মাঝে সমঝোতার ডাক দেন, তাহলে সেটি হতে পারে এক মোড় পরিবর্তনের সূচনা।
এক প্রতিক্রিয়ায় ড. মাহবুব উল্লাহ্ বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া যদি উদাত্ত আহ্বান জানান যে, এই পরিস্থিতি জাতির জন্য ভয়াবহ—ঐক্য ছাড়া উপায় নেই, তাহলে মানুষ তা মনোযোগ দিয়ে শুনবে। কারণ তার প্রতি মানুষের আস্থা রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমার বিশ্বাস, গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতারা তার সঙ্গে দেখা করলে এবং এ ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানালে তিনি নিশ্চয়ই সাড়া দেবেন।”
ড. মাহবুব উল্লাহ্ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকাকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখেছেন। তিনি বলেন, “ইউনূস সাহেব (Yunus)-এর নেতৃত্বে আলোচনার যে প্রক্রিয়া চলছে, তা থেমে গেলে জাতির জন্য হতাশাজনক হবে।” তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “উনি জাতিকে এতিম রেখে যেতে পারেন না। দায়িত্ব নিয়েছেন বলেই এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন এবং জনগণও তার পাশে রয়েছে।”
অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ্ মনে করেন, বেগম জিয়ার আপসহীন ভাবমূর্তির ভেতরেই রয়েছে রাজনৈতিক সমঝোতার মূল চাবিকাঠি। তিনি বলেন, “জাতীয় ঐক্য গঠনে তার ভূমিকা নিতে পারলে তা হবে এক ঐতিহাসিক কর্মসূচি।” এ সময় তিনি কঠোরভাবে সতর্ক করেন, “যদি রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন না হয়, তাহলে দেশের ভেতর ফ্যাসিবাদী শক্তি এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদ আবারও প্রভাব বিস্তার করবে। যা শুধু রাজনৈতিক বিপর্যয় নয়, বরং গৃহযুদ্ধের পরিবেশও সৃষ্টি করতে পারে।”
ড. মাহবুব উল্লাহ্ এ অবস্থাকে চরম উদ্বেগজনক আখ্যা দিয়ে বলেন, “বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তি কেন এই বিপদের সম্ভাবনা উপলব্ধি করতে পারছে না তা বোধগম্য নয়। এটি অনেককে হতাশ করছে।” তিনি আরো বলেন, “এই অনিশ্চয়তা ও দ্বন্দ্ব চলতে থাকলে আন্তর্জাতিক আধিপত্যবাদীরা সহজেই সুযোগ নেবে।”
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, “জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। আলোচনার টেবিলে বসতে হবে এবং সমঝোতার পথে অগ্রসর হতে হবে।” তিনি সতর্ক করেন, “তা না হলে গণতন্ত্র আবারও মার খাবে, আর দেশে পুনরায় ফিরে আসবে সেই পুরনো সম্প্রসারণবাদী ছায়া।”