“গণহত্যার বিচারের ফরমাল চার্জ আমলে নেওয়ার মধ্যে দিয়ে বিচার প্রক্রিয়া দৃশ্যমান করা হয়েছে”—আসিফ নজরুল

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল (Asif Nazrul)। রোববার (২৫ মে) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি মামলার ফরমাল চার্জ আমলে নেওয়ার মধ্য দিয়ে এই বিচারিক যাত্রার সূচনা হয়।

সোমবার (২৬ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে ড. নজরুল বলেন, “গণহত্যার বিচার আমাদের অন্যতম অঙ্গীকার। বিচার শুরু হচ্ছে শিগগির।” তিনি উল্লেখ করেন, “এটি দৃশ্যমান করা হয়েছিল আট মাস আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত পুনর্গঠনের মাধ্যমে। এরপর তদন্ত ও প্রসিকিউশন অফিস পুনর্গঠন করা হয়। কয়েকটি মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে, একটি মামলায় চার্জ গঠনের পর ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়, যা এখন আমলে নেওয়া হয়েছে।”

ড. নজরুল বলেন, “ট্রাইব্যুনাল ফরমাল চার্জ আমলে নেওয়ার মাধ্যমে একটি বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। এটি আমাদের জন্য ইতিহাসের নতুন অধ্যায়।”

পোস্টে তিনি আরও দাবি করেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রধান আসামি হিসেবে শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-র মামলার শুনানি অচিরেই শুরু হবে। “ইনশা আল্লাহ, অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলেই এ বিচারের রায় পেয়ে যাব আমরা,”—উল্লেখ করেন তিনি।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ বর্তমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেও আন্তর্জাতিক ও জনসমর্থন আদায়ের কৌশল হতে পারে। অন্যদিকে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ এবং বিচার শুরু হওয়ার ঘোষণা একে রাজনৈতিক বিচার বলেও ব্যাখ্যা করার আশঙ্কা আছে।

এর আগে গত বছরের জুলাই মাসে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন এবং ‘রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন’-এর অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কাঠামো পুনর্গঠনের ঘোষণা দিয়েছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

তদন্তকারী দল একাধিক মামলায় তথ্য সংগ্রহ, সাক্ষ্যগ্রহণ ও নথি যাচাইয়ের কাজ শেষ করেছে বলে জানা গেছে। প্রসিকিউশন ইউনিটের একটি অংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে একটি মামলায় চার্জ গঠন করে ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়। রবিবার সেটি আমলে নেওয়া হয়েছে, ফলে বিচারিক প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।

ফেসবুক পোস্টে ড. আসিফ নজরুল আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, “এই বিচার শুধু রাজনৈতিক দায়মুক্তির অবসান নয়, এটি আমাদের অতীতের দায়বদ্ধতা পূরণের পথও খুলে দেবে। গণহত্যার বিচার, আমাদের অঙ্গীকার।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *