জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিজেদের ‘আন্দোলনের মূল শক্তি’ হিসেবে তুলে ধরলেও, তাদের দাবিকে ঘিরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানালেন রুমিন ফারহানা (Rumeen Farhana)। বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও এই ব্যারিস্টার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন—বিএনপি এনসিপির কোনো আত্মীয় নয়, যে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে হবে।
সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের টকশোতে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ যদি সত্যিই আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করে এবং এনসিপি যদি সত্যিই অভ্যুত্থানের মূল পক্ষ হয়ে থাকে, তাহলে তো ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯০ আসন তাদেরই পাওয়ার কথা। পাক, ক্ষমতায় এসে তাদের এজেন্ডা নিজেরাই বাস্তবায়ন করুক। বিএনপি তো তাদের মামা না, খালুও না।’
এনসিপির দাবিতে সন্দেহ
এনসিপি নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থানকে ‘মধ্যপন্থী’ বলে দাবি করলেও, তাতে আস্থা রাখতে পারছেন না রুমিন ফারহানা। তিনি বলেন, ‘তারা নিজেরাই বলে একমাত্র তারাই অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে। আর টকশোগুলোতে তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট বোঝা যায়, তারা সব করেছে এবং আমাদের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে যেভাবে কথা বলে, তাতে রাজনীতির ন্যূনতম সৌজন্যবোধও অনুপস্থিত।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমরা এখনো জানি না এনসিপির কোনো গঠনতন্ত্র আছে কিনা। আদর্শও অজানা। তারা কিসের ভিত্তিতে রাজনীতি করছে, তাও পরিষ্কার নয়। তাদের পুরো রাজনীতি যেন “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করো” এই একটিমাত্র দাবির চারপাশেই ঘুরছে। এর বাইরে তাদের পক্ষ থেকে কোনো রূপরেখা আসেনি—কী দেবে মানুষকে, কী পরিকল্পনা আছে রাষ্ট্র চালাতে, এসব একেবারেই অস্পষ্ট।’
‘মামাবাড়ির আবদার দিয়ে বিএনপিকে চালানো যাবে না’
রুমিনের ভাষায়, ‘তাদের দুটি দাবি আমরা দেখছি—একটা হলো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, আরেকটা হলো বিএনপিকে দিয়ে সব সংস্কার করানো। মানে, মামাবাড়ির যত আবদার, সব বিএনপিকে দিয়ে মানাতে হবে। অথচ নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো নির্দিষ্ট রূপরেখা তারা দেয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনে তো কেউ হারার জন্য যায় না। প্রতিটি দলের একটি প্রস্তুতি থাকা দরকার—ক্ষমতায় গেলে কী করবে? এনসিপির কাছ থেকে আমরা এমন কোনো পরিষ্কার পরিকল্পনা এখনো দেখিনি। কাজেই তারা যতই নিজেদের মধ্যপন্থী বলুক, আমি সেটা বুঝতে পারছি না।’
এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে রুমিন ফারহানা কেবল এনসিপির রাজনৈতিক দুর্বলতা ও অস্পষ্টতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেননি, বরং এটিও স্পষ্ট করেছেন যে, বিএনপি কোনো ‘ছায়া নেতৃত্বে’ চলবে না।