জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার আলোচনায় অংশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো সরাসরি অভিযোগ তুলেছে—কমিশন এখনো জাতির সামনে প্রকাশ করেনি সেই তালিকা, যেখানে সাড়ে তিন মাসে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তা উল্লেখ থাকার কথা ছিল। সোমবার বিকেলে ঢাকার বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি (Bangladesh Foreign Service Academy)-তে অনুষ্ঠিত হয় এই আলোচনাসভা, যেখানে ৩০টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
বৈঠক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির (Revolutionary Workers Party) সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক (Saiful Haque) এক কড়া মন্তব্য করে বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠনের পরে সাড়ে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তারা সেই তালিকা প্রকাশ করতে পারেননি, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেসব বিষয়ে একমত হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে।”
তাঁর কথায় ধরা পড়ে হতাশা ও ক্ষোভ—“জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উচিত ছিল এই সময়ের মধ্যে অন্তত একটি তালিকা তৈরি করে তা জাতির সামনে উপস্থাপন করা, যাতে বোঝা যায় আলোচনায় কতদূর অগ্রগতি হয়েছে।”
তিনি জানান, সোমবারের আলোচনাও ছিল আন্তরিক, এবং রাজনৈতিক দলগুলো তাদের বক্তব্য সুনির্দিষ্টভাবে উপস্থাপন করেছে। “আমরা বলেছি, সম্ভব হলে আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে ঐকমত্যের বিষয়গুলো একটি লিখিত তালিকা আকারে প্রকাশ করুন,”—বলেন সাইফুল হক।
তবে শুধু তালিকা নয়, আলোচনার কাঠামো নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। জানালেন, আগামীকাল সকাল ১১টায় আরও একটি বৈঠক ডেকেছে কমিশন, কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করছে—বিতর্কিত ইস্যুগুলো একসাথে তোলার ফলে আলোচনা একটি উত্তপ্ত বিতর্ক সভায় রূপ নিতে পারে।
সাইফুল হকের মতে, “এভাবে না করে সংবিধান সংস্কারের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে তিন-চারটি দলকে আলাদাভাবে নিয়ে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করলে ফলপ্রসূ হতো।”
সাড়ে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো ঐকমত্যের তালিকা জাতির সামনে তুলে না ধরায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাড়ছে অসন্তোষ। পরবর্তী বৈঠকে কমিশন এই তালিকা প্রকাশ করে কিনা, সে দিকেই এখন দৃষ্টি সবার।