২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল ‘ডামি’—আদালতে সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল (Kazi Habibul Awal)–এর এমন স্বীকারোক্তিকে ‘গুরুতর’ আখ্যা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (Khaleda Zia)–র সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান (Maruf Kamal Khan)। তিনি বলেন, “এই স্বীকারোক্তি রাষ্ট্রীয় অবৈধতার চূড়ান্ত দলিল।”
বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিশ্লেষণধর্মী পোস্টে মারুফ কামাল বলেন, “জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশে সরকার, সংসদ ও রাষ্ট্রীয় কাঠামো গঠিত হয়। এই নির্বাচন যদি ডামি হয়, তাহলে তার মাধ্যমে গঠিত সরকার, মন্ত্রিসভা, সংসদ—সবই অবৈধ।”
তিনি আরও বলেন, “ভুয়া জনপ্রতিনিধিরা সুষ্ঠু নির্বাচনে জিততে পারতেন না। ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের বিজয়ী দেখিয়ে মূলত দেশের প্রকৃত জনপ্রতিনিধিদের অধিকার হরণ করা হয়েছে। ফলে তাদের মাধ্যমে গঠিত সংসদ, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, এমনকি স্পিকারও অবৈধ হয়ে যান।”
পোস্টে মারুফ কামাল খান অভিযোগ করেন, “তারা যেসব আইন পাস করেছে, বাজেট দিয়েছে, রাষ্ট্রপতির নির্বাচন করেছে, পদোন্নতি ও নিয়োগ দিয়েছে—সবই অবৈধ। এমনকি যেসব বিচারক তারা নিয়োগ দিয়েছেন, তাদের রায়ও অবৈধ।”
এমন অবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালনার নৈতিক ভিত্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন তিনি। মারুফ কামাল আরও বলেন, “এতোসব অবৈধতার উৎস যে ‘ডামি নির্বাচন’, তার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ভয়াবহ শাস্তি হওয়া উচিত। শুধু জনগণের সঙ্গে প্রতারণা নয়, এটি রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল।”
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “পরবর্তী নির্বাচিত সরকার কি এসব অবৈধ কাজকে বৈধতা দেবে, নাকি নতুন ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ফিরিয়ে আনবে? এটাই এখন বড় প্রশ্ন।”
উল্লেখ্য, বুধবার রাজধানীর মগবাজার থেকে গ্রেপ্তার হন সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল। বিএনপির (BNP) দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়, যেখানে অভিযোগ ছিল, তিনি রাষ্ট্রদ্রোহ ও প্রতারণার মাধ্যমে ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদে “ভুয়া নির্বাচন” পরিচালনা করেছেন। বৃহস্পতিবার আদালতে রিমান্ড শুনানিতে তিনি বলেন, “আমি ডামি নির্বাচন করেছি। তবে কোনো ঘুষ নেইনি।”
এই বক্তব্যের পরপরই রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার আদালতে এমন স্বীকারোক্তি দিলে তার গঠিত গোটা নির্বাচনী কাঠামোর বৈধতা কীভাবে টিকে থাকে?