ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠায় ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখা নবাব খাজা সলিমুল্লাহর ১৫৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁর প্রপৌত্র, জনপ্রিয় চিত্রনায়ক নাইম (Nayeem) কর্তৃক উত্থাপিত দাবিগুলো মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন নাইম।
৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে নবাব সলিমুল্লাহর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাইমসহ আরও অনেকে। আলোচনায় অংশ নিয়ে নাইম বলেন, “আমাদের পরিবার অবিভক্ত ভারত থেকেই মানুষের কল্যাণে কাজ করে আসছে। নবাব সলিমুল্লাহ সেই ব্রিটিশ আমলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৬০০ একর জমি দান করেছিলেন। অথচ তাঁর জন্ম বা মৃত্যুদিন কোনোদিন পালিত হয়নি। পাঠ্যসূচি থেকেও তাঁর অধ্যায় বাদ দেওয়া হয়েছে। তাহলে নতুন প্রজন্ম জানবে কীভাবে?”
নাইম অনুষ্ঠানে তিনটি মূল দাবি তুলে ধরেন:
1. নবাব সলিমুল্লাহর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পালন।
2. তাঁর নামে একটি রিসার্চ সেন্টার এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি চালু।
3. সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ঐতিহ্য রক্ষা এবং সেখানে তাঁর নামে চেয়ার প্রতিষ্ঠা।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠান চলাকালেই এই দাবিগুলো মেনে নেয় বলে জানান নাইম। একই সঙ্গে তিনি আশ্বাস পান যে, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ভবিষ্যৎ সংস্কার কাজ ঐতিহ্য সংরক্ষণ করেই করা হবে।
নাইম বলেন, “আমরা শুনেছিলাম, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ভেঙে নতুন ভবন করার পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা জানিয়েছি—এটি আমাদের ইতিহাস ও আত্মপরিচয়ের অংশ, কোনোভাবেই ভাঙা যাবে না।”
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আন্তরিক সহযোগিতা ও সম্মানিত অতিথি হিসেবে পরিবারের সদস্যদের স্বাগত জানানোর বিষয়টি তুলে ধরে নাইম বলেন, “বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, অধ্যাপক মুহাম্মাদ রুহুল আমিন এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ ওমর ফারুককে। তাঁদের আন্তরিক উদ্যোগ ও শিক্ষার্থীদের আগ্রহ দেখে মন ভরে গেছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নবাব সলিমুল্লাহর অবদান অনস্বীকার্য। ১৯১১ সালের আগস্টে কার্জন হলে তাঁর রাজনৈতিক ভাষণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি উত্থাপনের মধ্য দিয়েই সূচনা হয় এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভিত্তির। ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠার সময় তাঁর দান করা জমিতেই গড়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই প্রেক্ষাপটে পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক স্থাপন নিঃসন্দেহে ইতিবাচক।