ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (Asif Mahmud Sojib Bhuiyan)-এর হাতব্যাগ থেকে অস্ত্রের ম্যাগাজিন উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে সামাজিক মাধ্যমে। মরক্কোগামী ফ্লাইটে ওঠার সময় স্ক্যানিংয়ে বিষয়টি ধরা পড়লেও তিনি জানান, এটি ছিল নিছক ‘ভুল’ এবং এ বিষয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি নিজেই।
রবিবার (২৯ জুন) ভোরে মারাকেশগামী তার্কিশ এয়ারলাইন্সের TK-713 ফ্লাইটে ওঠার আগে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা স্ক্রিনিংয়ে ধরা পড়ে তার ব্যাগে থাকা একটি অস্ত্রের ম্যাগাজিন। বিষয়টি নিয়ে হৈচৈ শুরু হলে উপদেষ্টা আসিফ নিজেই নিজের ফেসবুক পেজে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে জানান, ঘটনাটি ‘সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত’।
তিনি লেখেন, “নিরাপত্তার স্বার্থে আমার লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র রয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের ওপর কয়েকবার হত্যাচেষ্টা হয়েছে। সরকারি নিরাপত্তা না থাকলে নিজেকে এবং পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে অস্ত্র রাখা খুবই স্বাভাবিক। তবে ভোরে তাড়াহুড়োয় প্যাকিং করার সময় একটি ম্যাগাজিন ভুলবশত ব্যাগে থেকে যায়।”
আসিফ জানান, স্ক্যানিংয়ে বিষয়টি ধরা পড়ার পর তিনি সঙ্গে থাকা প্রটোকল অফিসারের কাছে ম্যাগাজিনটি হস্তান্তর করেন এবং নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “শুধু ম্যাগাজিন দিয়ে আমি কি করবো ভাই? যদি আমার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য থাকতো, তাহলে অস্ত্রটিও সাথে থাকতো। কিন্তু এমন কিছু হয়নি। এখানে অবৈধ কিছু ছিল না, তা সত্ত্বেও কেউ কেউ এটাকে ঘিরে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।”
ঘটনার পর সংবাদ প্রকাশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আসিফ বলেন, তিনি ১০ ঘণ্টার টানা ফ্লাইটে ছিলেন এবং ট্রানজিটের সময়েই এসব খবর চোখে পড়েছে। “কেউ চাপ দিয়ে নিউজ সরানোর চেষ্টা করেছে—এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন,” উল্লেখ করে তিনি বলেন, নাগরিক হিসেবে যার নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে, সে আইনি পথে অস্ত্রের লাইসেন্স নিতে পারেন।
ঘটনাটি নিশ্চিত করে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ (SM Ragib Samad) বলেন, “প্রি-বোর্ডিং স্ক্রিনিংয়ের সময় উপদেষ্টার হাতব্যাগে একটি ম্যাগাজিন পাওয়া যায়। তিনি জানান, ভুলবশত ব্যাগে রয়ে গেছে। এজন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন এবং সেটি তার প্রটোকল অফিসারের মাধ্যমে ফিরিয়ে দেন।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও, আসিফ মাহমুদের ব্যাখ্যার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। তবুও নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থার বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে।