চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক নারীর হাতে স্বামী গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। প্রেম করে বিয়ে করা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে যখন বিচ্ছেদের হুমকি বারবার উচ্চারিত হতে থাকে, তখনই ঘটে এই ভয়াবহ ঘটনা। গভীর রাতে ঘুমন্ত স্বামীর বিশেষ অঙ্গ কেটে ফেলেন স্ত্রী, যা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
রবিবার (২৯ জুন) ভোররাতে জেলার সদর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্রামে ঘটেছে এ মর্মান্তিক ঘটনা। অভিযুক্ত স্ত্রী তাসলিমা খাতুন (১৯), সদর উপজেলার মিরেরচরা গ্রামের আকরাম আলীর মেয়ে। আহত রায়হান আলী (২০), একই উপজেলার মোল্লাপাড়া গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, তাসলিমা ও রায়হান প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে সম্প্রতি বিয়ে করেন। তবে বিয়ের পর থেকেই রায়হান তার স্ত্রীকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এই মনস্তাত্ত্বিক চাপ এবং অপমান সইতে না পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাসলিমা। গভীর রাতে, স্বামীর ঘুমের সুযোগে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার বিশেষ অঙ্গ সম্পূর্ণভাবে কেটে দেন তিনি।
স্বামীর করুণ আর্তনাদ শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে পরিস্থিতি বুঝতে পারেন। পরে তাসলিমাকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন তারা। সকাল পর্যন্ত স্থানীয়রা তাকে পাহারা দিয়ে রাখে এবং পরে পুলিশে সোপর্দ করেন।
চিকিৎসার জন্য রায়হানকে প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতাল (Chapainawabganj District Hospital)-এ নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (Rajshahi Medical College Hospital)-এ, যেখানে তিনি গুরুতর অবস্থায় ভর্তি আছেন।
শাহজাহানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম জানান, “ঘটনার পরপরই তাসলিমাকে আটক করা হয়। তার পরিবারের লোকজনকে খবর দেওয়া হলেও তারা ঘটনাস্থলে আসেননি। পরে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাসলিমা তার স্বামীর বিশেষ অঙ্গ কেটে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে।”
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এএনএম ওয়াসিম ফিরোজ (ANM Wasim Firoz) বলেন, “অভিযুক্ত নারীকে আটক করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।”
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রেম, বিয়ে এবং তার পরবর্তী টানাপোড়েন থেকে এমন ভয়াবহ পরিণতির ঘটনায় সামাজিকভাবে তৈরি হয়েছে আলোড়ন।