“জুলাই বিপ্লবের মূল নেতৃত্বে ছিলেন তারেক রহমান”—অধ্যাপক মোর্শেদ

“নেতৃত্ব মানে দূরত্ব নয়, নেতৃত্ব মানে জনতার হৃদয় জয় করা”—এভাবেই তারেক রহমান (Tarique Rahman)-কে বর্ণনা করলেন বিএনপির গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান। মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপি আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লবের সময় পুরো জাতি যখন হতাশায় নিমজ্জিত, তখন প্রবাসে থেকেও তারেক রহমান জাতিকে আশার আলো দেখিয়েছেন।”

ড. মোর্শেদ হাসান খান (Morshed Hasan Khan), যিনি জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয় বর্ষপূর্তি পালন কমিটির সদস্য সচিব, বলেন—“৫ আগস্টের পর তারেক রহমান যেভাবে দ্রুত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, তা প্রমাণ করে তিনি শুধু বিএনপির নেতা নন, বরং একজন গণমানুষের নেতাও বটে। তার নেতৃত্বে আজকের তরুণরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখে—যেখানে থাকবে ন্যায়, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা।”

অনুষ্ঠানটি ছিল চব্বিশের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিএনপির ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা। এতে শহীদ পরিবার, আহত নেতাকর্মী, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীসহ ৬৩টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা অংশগ্রহণ করেন। শহীদ পরিবারকে সম্মাননা, এক মিনিট নীরবতা ও একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের মাধ্যমে দিনটি স্মরণ করা হয়।

বক্তব্যে অধ্যাপক মোর্শেদ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, “গণতন্ত্র ফিরে পেতে এই জাতি যে দীর্ঘ সংগ্রাম করেছে, তাতে তারেক রহমানের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি আমাদের শক্তি জুগিয়েছেন তার কণ্ঠে স্বাধীনতার ডাক দিয়ে।”

তিনি আরও বলেন, “স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়িয়েছেন, তাদের অনেকেই জীবন দিয়েছেন, অনেকে গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। এমনকি খালেদা জিয়া (Khaleda Zia)-কেও রাজনৈতিক কারণে কারাবন্দি করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আপসহীন ছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছেন, যা আমাদের নতুন প্রেরণা দিয়েছে।”

অধ্যাপক মোর্শেদ আরও যোগ করেন, “গণতন্ত্র কারও দয়ার দান নয়—এটি অর্জন করতে হয় রক্ত, ঘাম, আন্দোলন আর একতাবদ্ধতার মাধ্যমে। ১৬ বছরের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা তা প্রমাণ করেছি এবং সামনে আরও লড়াই বাকি। বিজয় আমাদের হবেই।”

তিনি দাবি করেন, গুম-খুন হওয়া শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ, দ্রুত বিচার ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে। সেইসঙ্গে আহত ও নিহতদের পরিবারকে সম্মানজনক পুনর্বাসনের আহ্বান জানান।

সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, “আজ আমরা শপথ নিই—শহীদের রক্ত বৃথা যাবে না, আহতদের ত্যাগ বৃথা যাবে না। আমাদের লক্ষ্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, জাতীয় ঐক্য ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার।” এছাড়া তিনি তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য দেশবাসীর অপেক্ষার কথা উল্লেখ করেন এবং খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *