ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় এক উত্তেজনাকর ঘটনার জন্ম দিল জাতীয় নাগরিক পার্টি—এনসিপি (National Citizen Party)। শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে দলটির জুলাই মাসব্যাপী পদযাত্রার অংশ হিসেবে ঠাকুরগাঁও থেকে পীরগঞ্জগামী গাড়িবহরে সংঘটিত হয় একটি ভয়াবহ হামলার ঘটনা। ঘটনার সূত্রপাত হয় টাঙ্গন ব্রিজ এলাকায়, যেখানে একটি আন্তঃজেলা বাস আকস্মিকভাবে চাপা দেয় এনসিপির বহরের একটি গাড়িকে।
এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঠাকুরগাঁওয়ের আর্ট গ্যালারি মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দলটি পীরগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেয়। কিছুদূর যাওয়ার পর, টাঙ্গন ব্রিজ অতিক্রমকালে একটি বাস এসে তাদের বহরের একটি গাড়িতে সজোরে আঘাত করে। এই আকস্মিক সংঘর্ষে গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বহরের অন্য সদস্যরা থেমে বাসচালকের কাছে ঘটনার ব্যাখ্যা চাইতে যান। ঠিক সেই সময়ই ৫ থেকে ৬ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি দলটির নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হয়।
হামলায় আহত হন গাড়িচালকসহ এক এনসিপি কর্মী। এই হামলাকে নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং স্পষ্ট হত্যাচেষ্টা হিসেবে দেখছে এনসিপি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামলাটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত। তাদের দাবি, বাস চাপা দিয়ে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের হত্যা করাই ছিল হামলাকারীদের মূল উদ্দেশ্য, যদিও তারা সঠিক গাড়ি শনাক্ত করতে পারেনি। পরে সুযোগ বুঝে বহরের অন্যান্য গাড়িতে থাকা কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর হামলা চালায়।
ঠাকুরগাঁও জেলা এনসিপির মুখ্যপাত্র অপু কালবেলা (Apu Kalbela) বলেন, “হামলাকারীরা সম্ভবত নাহিদ বা সারজিসদের টার্গেট করেছিল। প্রথমেই বাস দিয়ে চাপা দেওয়ার চেষ্টা থেকে স্পষ্ট—এটি সরাসরি হত্যাচেষ্টা ছিল।”
অন্যদিকে, ঘটনার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সারওয়ার হোসেন (Sarwar Hossain)। তিনি বলেন, “ঘটনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এনসিপির পক্ষ থেকে এটি হামলা বলে অভিযোগ এসেছে। তারা একজন হামলাকারীর ভিডিও ফুটেজও আমাদের দেখিয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনার পর এনসিপির ভেতরে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দলটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।