‘বিএনপির গলায় দড়ি দেওয়া উচিত’—গোলাম মাওলা রনির বিস্ফোরক মন্তব্যে আলোড়ন

সাবেক সংসদ সদস্য, আলোচিত রাজনীতিবিদ ও কলাম লেখক গোলাম মাওলা রনি (Golam Mawla Rony) আবারও বিতর্কের কেন্দ্রে। সম্প্রতি জনপ্রিয় ইউটিউব টকশো ‘তৃতীয় মাত্রা’-তে অংশ নিয়ে তিনি একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে রাজনৈতিক অঙ্গনে সাড়া ফেলেছেন।

আলোচনার শুরুতেই রনি বলেন, “বিএনপি (BNP)-র এখন এমন অবস্থা যে তাদের গলায় দড়ি দেওয়া উচিত।” তিনি কটাক্ষ করে জানান, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে যদি আমাকে পাঠানো হতো, তাহলে আমি এতদিনে ইঁদুরের বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করতাম। যারা সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করছেন, তারা জাতির ভবিষ্যতের সাথে ছেলেখেলা করছেন।”

সরকারের উদ্দেশে তার সরাসরি আহ্বান, “এই টানাহেঁচড়া বন্ধ করে পরিষ্কার করে দিন—আপনারা ‘জুলাই বিপ্লবের’ মাধ্যমে এক বিপ্লবী সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চলেছেন। জনগণ মানবে কি না, তা নিয়ে ভাবার কিছু নেই।”

তিনি অভিযোগ করেন, “নির্বাচন ঘিরে ১০ মাস আগে যে প্রত্যাশা ছিল, এখন তা ১০ গুণ জটিল হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে মব গঠিত হচ্ছে। অথচ ড. ইউনূস (Dr. Yunus) নিশ্চুপ। এ সময়ে তার থেকে মানুষ স্পষ্ট অবস্থান আশা করছিল।”

রনি এ সময় দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন, “ফল বিক্রেতা, রিকশাচালক থেকে শুরু করে বড় ব্যবসায়ী, পুলিশ কনস্টেবল থেকে আইজিপি পর্যন্ত সবাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। খুলনায় মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের অফিস তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর পর্যন্ত লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন। এটাই দেশের বাস্তবতা।”

ড. ইউনূস প্রসঙ্গে রনি বলেন, “তিনি এক রহস্যময় চরিত্র হয়ে উঠেছেন। তিনি লোভী, না নির্লোভ; শক্তিমান, না দুর্বল—তা বোঝা যাচ্ছে না। তিনি নির্বাচন চান কি না বা ক্ষমতায় আসতে চান কি না—এটাও স্পষ্ট নয়।”

রনি আরও অভিযোগ করেন, “রাষ্ট্রের মানচিত্র পরিবর্তনের কথা বলা হলেও, কাউকে রাষ্ট্রদ্রোহে গ্রেপ্তার করা হয়নি। কৌশলগত স্থাপনাগুলো পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।”

অবশেষে, জাতীয় ঐকমত্য ও সংস্কার নিয়ে চলমান উদ্যোগগুলোকেও কড়া সমালোচনায় বিদ্ধ করেন রনি। বলেন, “এসব কমিশনের কোনো বাস্তব কার্যকারিতা নেই। বরং এগুলো শুধুই সময় নষ্ট করছে এবং জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙার উপক্রম করেছে।”

সবশেষে রনি ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন, “প্রকৃতি নিয়ম মেনেই চলে। যেখানে উত্থান, সেখানেই পতন। জুলাই-আগস্টেই যাদের উত্থান, তাদের পতনও জুলাই-আগস্টেই ঘটবে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *