প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, মিশর, ফ্রান্স, দক্ষিণ আফ্রিকা, মালদ্বীপ, জর্ডান ও ওমান—এই আট দেশে ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদান কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নিয়েছে ইসি।
ইতোমধ্যে এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (Ministry of Foreign Affairs) বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব দেশে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।
এ বিষয়ে ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর সোমবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে জানান, “আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। এখন তাদের সম্মতির অপেক্ষায় আছি। সব প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন। কাজ শুরু হয়ে গেছে। আশা করছি, দ্রুতই সম্মতি পাবো।”
তিনি আরও জানান, “জাপানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য এনআইডি কার্যক্রম এই জুলাই মাসেই চালু হতে পারে। তবে সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনই বলা যাচ্ছে না, কারণ কিছু টেকনিক্যাল বিষয় রয়ে গেছে।”
এদিকে, ২ জুলাই ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (নিবন্ধন ও প্রবাসী) মো. আব্দুল মমিন সরকারের সই করা চিঠি পররাষ্ট্র সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়, বিশ্বের ৪০টি দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এনআইডি সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় এ কার্যক্রম চলছে।
এই তালিকার বাইরে থাকা ৩১টি দেশে (যেমন যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, জাপান, মিশর, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, চীন, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, সাইপ্রাস, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল, লিবিয়া, লেবানন, ওমান, বাহরাইন প্রভৃতি) একই কার্যক্রম চালুর লক্ষ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মতি চাওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে জাপানে এনআইডি কার্যক্রম চালুর অনুমোদন দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সে লক্ষ্যে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে যেসব দেশে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন ও এনআইডি কার্যক্রম চলছে—তা হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা। এসব দেশ থেকে ৪৭ হাজার ৩২ জন প্রবাসী ভোটার হতে আবেদন করেছেন। এদের মধ্যে ২৯ হাজার ৫৬৩ জনের বায়োমেট্রিক গ্রহণ করেছে মিশন অফিস এবং ২০ হাজার ৪৫১ জনকে ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে ৩ হাজার ৬৭৭টি আবেদন বাতিল হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন আশা করছে, এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন সম্ভব হবে।