বহিষ্কারের ৪৮ ঘণ্টার মাথায় গ্রেপ্তার টঙ্গী স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সিরাজুল ইসলাম সাথী

বিএনপি থেকে বহিষ্কারের ঠিক ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই টঙ্গী পূর্ব থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম সাথী (Sirajul Islam Sathi)–কে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১ (RAB-1)। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকার পূবাইল থানা সীমানা থেকে তাকে আটক করে র‍্যাবের একটি দল। পরে তাকে গার্মেন্টসের ঝুটের মালামাল সংক্রান্ত এক মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান।

এই ঘটনাটি ঘিরে গাজীপুর বিএনপিতে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ, এর আগে গত ৬ জুলাই রবিবার, বিএনপির গাজীপুর মহানগরের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হাসান জিএস স্বপন (Ziaul Hasan GS Swapon)-কে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তারের পরপরই দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গাজীপুর মহানগর বিএনপির চার নেতাকে বহিষ্কার করে। গ্রেপ্তার হওয়া জিএস স্বপনের পর সিরাজুল ইসলাম সাথী দ্বিতীয় ব্যক্তি, যিনি দল থেকে বহিষ্কারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হলেন।

বহিষ্কৃত বাকি দুই নেতা হলেন গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু (Rakib Uddin Sarkar Pappu) এবং গাজীপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হালিম মোল্লা (Abdul Halim Molla)। বহিষ্কারের চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, এই চার নেতা চাঁদাবাজি, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং বিএনপির আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থি অনৈতিক কার্যকলাপে যুক্ত ছিলেন।

বহিষ্কার সংক্রান্ত দুটি আলাদা চিঠিতে স্বাক্ষর করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী (Ruhul Kabir Rizvi) এবং কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাইফুল ইসলাম টিপু (Taiful Islam Tipu)। এতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয় যে, বহিষ্কৃত নেতারা দলীয় নীতি ও সংহতির পরিপন্থি অবস্থান নিয়েছেন এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।

তবে এই বহিষ্কার ও গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ভিন্নমত দেখা দিয়েছে। অনেকেই দাবি করছেন, সিরাজুল ইসলাম সাথী কখনোই চাঁদাবাজি বা গার্মেন্টসের ঝুটের দখল নিয়ে জড়িত ছিলেন না। বরং ভুল তথ্যের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বিভ্রান্ত করে বহিষ্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এই অবস্থায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজীপুর বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব এখন আরও প্রকট হয়ে উঠছে। একের পর এক বহিষ্কার ও গ্রেপ্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পর্যায়ে দলটির সাংগঠনিক কাঠামো ও নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *