জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও নাগরিক ঐক্য (Nagarik Oikya) দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ দাবি করলেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে—জাতীয় প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত ‘শাপলা’ আর কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হবে না। জাতীয় প্রতীকের মর্যাদা রক্ষার স্বার্থেই এই নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ (Abdur Rahmanel Mahsud)।
বুধবার (৯ জুলাই) সাংবাদিকদের তিনি জানান, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তফসিলভুক্ত প্রতীক তালিকা থেকে শাপলাকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে কমিশন ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে।
তাঁর ভাষ্য, “নতুন প্রস্তাবিত প্রতীক তালিকায় শাপলা রাখা হচ্ছে না। জাতীয় প্রতীক হিসেবে শাপলা এবং জাতীয় পতাকা নিয়ে সংবিধানে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এ কারণে আমরা শাপলাকে নির্বাচন কমিশনের প্রতীক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করছি না।”
উল্লেখ্য, এনসিপি নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করে দলীয় প্রতীক হিসেবে জাতীয় ফুল শাপলা বরাদ্দ চায়। যদিও তাদের বিকল্প তালিকায় কলম ও মোবাইল ফোনও ছিল, তবে দলটির মূল আকাঙ্ক্ষা ছিল শাপলা প্রতীকেই।
এর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক শুরু হয়—জাতীয় প্রতীক কি দলীয় প্রতীক হিসেবে ব্যবহারযোগ্য? বিষয়টি ঘিরে সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন ওঠে। নির্বাচন কমিশনের মতে, জাতীয় প্রতীক হিসেবে শাপলার মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখার দায়বদ্ধতা থেকেই তারা এই পদক্ষেপ নিচ্ছে।
নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার নতুন সংস্করণ অনুযায়ী এবার ৬৯টি প্রচলিত প্রতীকের পরিবর্তে ১১৫টি প্রতীক রাখার প্রস্তাব করছে কমিশন। শিগগিরই এ তালিকা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে।
কমিশনার মাছউদের মতে, জাতীয় প্রতীক নিয়ে স্পষ্ট আইন রয়েছে, এবং এ ব্যাপারে একটি বিধিমালাও আছে। তবে জাতীয় ফুল বা জাতীয় পাখির মতো প্রতীকের বিষয়টি আইনে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না থাকলেও, সংবিধান এবং জাতীয় মর্যাদার প্রশ্নে এসব প্রতীককে নির্বাচন থেকে আলাদা রাখা জরুরি বলেই তারা মনে করছেন।
শাপলাকে বাদ দিয়ে যে প্রতীক তালিকা তৈরি হচ্ছে, তাতে নতুন প্রতীক যোগের সুযোগ থাকবে এবং তা আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই শেষে চূড়ান্ত হবে।
জাতীয় প্রতীকের ব্যবহার সীমিত রেখে ইসি তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে দিয়েছে—জাতীয় প্রতীক আর কোনোভাবেই রাজনৈতিক প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হবে না।