নিবন্ধন এখনো অনিশ্চিত থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলোতে প্রতীক বরাদ্দের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। বিশেষ করে মোবাইল ও কলম প্রতীককে ঘিরে একাধিক দলের মধ্যে শুরু হয়েছে চিঠি-পাল্টা চিঠির লড়াই।
সবচেয়ে বড় বিরোধ দেখা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ‘জনস্বার্থে বাংলাদেশ’ এবং ‘বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি’র মধ্যে। এর আগে শাপলা প্রতীক ঘিরে এনসিপি ও নাগরিক ঐক্যের মধ্যে বিবাদ চলছিল, যা এখন মোড় নিয়েছে মোবাইল ও কলম প্রতীকের দিকে।
এনসিপি তাদের নিবন্ধনের সময় ‘শাপলা’কে অগ্রাধিকার দিয়ে পাশাপাশি মোবাইল ও কলম প্রতীকও চেয়েছে। কিন্তু ১৭ জুন নাগরিক ঐক্য ‘কেটলি’ বাদ দিয়ে শাপলা চেয়ে আবেদন করায় বিরোধ শুরু হয়। এরপর নির্বাচন কমিশন শাপলা প্রতীক তালিকা থেকে বাদ দেয়। এনসিপি এখন বলছে, শাপলা না হলে মোবাইল বা কলমও চাই। অন্যথায় তারা রাজনৈতিকভাবে লড়াই চালাবে।
এদিকে ‘জনস্বার্থে বাংলাদেশ’-এর সভাপতি মো. বাবুল হোসেন নির্বাচন কমিশনে লিখিত চিঠিতে বলেন, “আমরা ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর ‘মোবাইল’ প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছিলাম এবং সেই সময় থেকে এ প্রতীক নিয়ে আমাদের রাজনৈতিক প্রচার-প্রচারণা চলছে। এখন গণমাধ্যমে শুনছি এনসিপিকে মোবাইল প্রতীক দেওয়া হতে পারে, এতে আমরা তীব্র আপত্তি জানাচ্ছি।”
তিনি আরও অনুরোধ করেন, বিষয়টি সুরাহার জন্য নির্বাচন কমিশন যেন ‘জনস্বার্থে বাংলাদেশ’ দলের সঙ্গে আলোচনায় বসে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টির মুখপাত্র কাজী শামসুল ইসলাম দাবি করেন, “আমরাই কলম প্রতীকের প্রাথমিক দাবিদার। ২০২৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আমরা কলম প্রতীকের জন্য আনুষ্ঠানিক আবেদন করেছি, তখন অনেক দল নিবন্ধনের আবেদনই করেনি। আমাদের গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র সবখানেই কলম ব্যবহৃত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “নীতিগতভাবে কলম প্রতীকের একমাত্র হকদার বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি।”
নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ১১৫টি প্রতীক চূড়ান্ত করেছে, যার মধ্যে মোবাইল ও কলম প্রতীকও রয়েছে। তবে এখনো প্রতীক বরাদ্দের সিদ্ধান্ত আসেনি, কারণ নিবন্ধনের প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি।
এইবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রেকর্ডসংখ্যক ১৪৭টি আবেদন জমা পড়েছে ১৪৪টি দলের পক্ষ থেকে। এসব আবেদন যাচাই-বাছাই চলছে।
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ (Abdur Rahmanel Mahsud) বলেন, “প্রতীক বরাদ্দ আসবে তখনই, যখন নিবন্ধনের শর্ত পূরণ হবে। তবে প্রতীক বরাদ্দে দলের পছন্দক্রমকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। একই প্রতীক একাধিক দল চাইলে, কমিশন নিজস্ব বিবেচনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।”
সব মিলিয়ে, দলীয় নিবন্ধন চূড়ান্ত না হলেও প্রতীক নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েন যে শুরু হয়ে গেছে, তা স্পষ্ট।