“মার্চ টু গোপালগঞ্জ” ঘিরে আজকের সংঘর্ষে নতুন এক চিত্র দেখা গেছে—নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ -আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের পাশাপাশি রাজপথে নেমেছেন স্থানীয় বহু নারী, যাঁরা দলীয় ডাকে সাড়া দিয়ে লাঠিসোঁটা, ইট-পাটকেল হাতে হাজির হন সংঘর্ষস্থলে। শুধু অংশগ্রহণই নয়, তাঁরা সরাসরি পুলিশের ওপর আক্রমণ চালান, এমনকি সাংবাদিকরাও রেহাই পাননি।
স্থানীয় সাংবাদিকদের ভাষ্যমতে, সংঘর্ষের সময় আশপাশের গ্রাম ও পাড়া-মহল্লায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে কর্মীদের আহ্বান জানানো হয়। ওই ডাকে সাড়া দিয়ে অনেক নারী রাস্তায় নেমে আসেন। তাঁদের হাতে ছিল বাঁশের লাঠি, ইট-পাটকেল, এবং দৃশ্যত উন্মত্ত এক মনোভাব।
এক প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক জানান, ‘সংবাদ কাভার করতে গিয়ে আমি নিজেই আহত হই। এক মহিলা প্রথমে এক পুলিশ সদস্যকে মারার উদ্দেশ্যে তেড়ে আসেন। পুলিশ সদস্য সরে যাওয়ার পর সেই আঘাত আমার মাথায় পড়ে। বাঁশের বাড়িতে মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছি, বর্তমানে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, সংঘর্ষে শুধু পুরুষ নয়, নারী অংশগ্রহণকারীদের আক্রমণও ছিল অত্যন্ত হিংস্র এবং অপ্রত্যাশিত।
সংঘর্ষের তীব্রতা বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নেয়। বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে গোপালগঞ্জ জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। এই কারফিউ চলবে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৬টা পর্যন্ত।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব এক ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘গোপালগঞ্জে আজ রাত ৮টা হতে পরবর্তী দিন বিকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে।’ এর আগে দুপুরে জেলার কিছু এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয় এবং দ্রুত মোতায়েন করা হয় ৪ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (BGB)।
জেলাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই অস্বাভাবিক রূপ নিচ্ছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে। প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।