তারা সেখানে যেতে চেয়েছে ইচ্ছে করেই, যেন গণ্ডগোল বাধে : মাসুদ কামাল

সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেন, যা কিছু ঘটেছে, কোনোটাই অপ্রত্যাশিত ছিল না। এনসিপি তাদের মার্চ টু গোপালগঞ্জ নামে যেটা করেছিল, এটা তারা খুব ইনটেনশনালি করেছিল। জুলাই আন্দোলনের আজকের দিনটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারা ঠিক এই তারিখে, মানে আজকের দিনে তারা সেখানে যেতে চেয়েছে ইচ্ছে করেই যে একটা গণ্ডগোল বাধুক।

আপনাকে এটা মানতে হবে যে ঢাকা শহরের পরিস্থিতি আর গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি এক না।
বুধবার (১৬ জুলাই) বেসরকারি একটি টেলিভিশনের টক শোতে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আপনি একটা পার্টি নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন, একটা ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন এবং একটা রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে নিষিদ্ধ করেছেন। তার মানে এই না নিষিদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মন থেকে পার্টিটা ভ্যানিশ হয়ে গেছে।

এটা হওয়া সম্ভব না। কারণ, যখন একটা স্বৈরাচারী সরকার এই ধরনের ঘোষণা দেয়। সেটাও মানুষ ভয়েও ভ্যানিশ করে না।
মাসুদ কামাল বলেন, জামায়াতকে তো আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করেছিল।

জামায়াত কি ভ্যানিশ হয়ে গিয়েছিল মানুষের হৃদয় থেকে? হয়নি। এটাও সেরকম হবে না। এই পার্টিটার যে মূল নেতা, সব নেতৃত্ব কিন্তু গোপালগঞ্জ জেলার। আপনি বলতে চাচ্ছেন সবাই এখন আওয়ামী বিরোধী হয়ে গেছে সেখানে?

এনসিপির সভা নিয়ে মাসুদ কামাল বলেন, ‘ঠিক আছে আমি মানলাম যে গত ১৭ বছর শেখ হাসিনা এদেশে একটা স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করেছিল। তাহলে আপনি সমালোচনা করেন।

কিন্তু এনসিপির যে লোকগুলো বিভিন্ন মিটিংয়ে যায়, তারা যেভাবে অযাচিতভাবে বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা করেন, এটা প্রাসঙ্গিক না, তবুও করছেন। এটা তারা গোপালগঞ্জে দাঁড়িয়ে করতে চাইবেন, আর গোপালগঞ্জের মানুষ তাদের ফুলের মালা দিয়ে অভ্যর্থনা জানাবে। এটা বাস্তবতা না, তারা জানে।’
তিনি বলেন, ‘তারা জেনে শুনে কেন করছে, কারণ এটা কেওয়া বাজান মূলক এবং তারা যে কারণে গিয়েছে, তাদের উদ্দেশ্য ফুলফিল হয়েছে। মারামারি হয়েছে, গোলাগুলি হয়েছে। তিন চার জন দেখলাম আহত হয়েছে, গুলি খেয়েছে। কেউ মারা গেছে কি না, আমি জানি না। সেখানকার পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়েছে, ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। এগুলোর কোনটাকে আপনি স্বাভাবিক বলবেন? স্বাভাবিক না।’

তিনি আরো বলেন, এখন যদি এসে কেউ বলে যে গোপালগঞ্জে যে সমস্ত ঘটনা ঘটছে, তারপরেও কি আপনি বলবেন নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ আছে? না নাই। এই যে জবাবটা, আপনার কাছ থেকে নাই পাওয়া, এটাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। নির্বাচনী পরিবেশে এখন নাই, দেখেন না গোপালগঞ্জে কি হচ্ছে? আমি যখন ইলেকশন দেব তখন কি গোপালগঞ্জে ইলেকশন দিতে হবে না? সেখানেও তো ইলেকশন দেব সেখানে এনসিপির মতো এরকম একটা মহান দল কোনো প্রার্থী দিতে পারবে না, এটা কি হইল হইল না তো।

এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, ‘অতএব এ বলে যে লেভেল প্লেইং ফিলড নাইতো, গোপালগঞ্জ নাইতো। এটা তো একটা এক্সকিউজ হিসেবে অসাধারণ এবং এইটাই ক্রিয়েট করা আসলে উদ্দেশ্য বলে আমি মনে করি। আমি সাজানো বলছি না, এটা হলো প্রি-প্ল্যান্ড, সাজানো আর কি। তারা জানে ঘটনাগুলো ঘটবে। মানে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, এটা এনসিপি করে নাই কিন্তু পরিকল্পিত।’

তিনি আরো বলেন, ‘ওখানে যাওয়াটাই উসকানি, এই মুহূর্তে ওখানে যাওয়ার বাস্তবতা তাদের ছিল না। যাওয়ার আগে তারা যে সব কথা কাহিনী বিভিন্ন জেলায় করেছে, বিভিন্ন জায়গায় বলেছে, তো সেখানে এটাই বলবে। এই বলাটা স্বাভাবিকভাবে আমি মনে করি। তারপরে যদি রাষ্ট্র আগের থেকে পূর্ব পরিকল্পনা করে এরকম এনভায়রনমেন্ট (নিরাপত্তা) ক্রিয়েট করার চেষ্টা করতো, তারা তো তাও করেনি।’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *