চাঁপাইনবাবগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রা ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থার সময় শিশু নির্যাতনের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে জাতীয় মহলেও। ২৮ সেকেন্ডের ওই ভাইরাল ক্লিপে দেখা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার (Chapainawabganj Sadar Police Station) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান এক শিশুর হাত ধরে আছেন, আর সহকারী উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হাই (Abdul Hai) তার টি-শার্টের গলা চেপে ধরে এবং চুল টেনে তাকে পেছনে ঠেলছেন।
ভিডিওটিতে স্পষ্টভাবে শিশুটির কান্না শোনা যাচ্ছে, তবে তাতেও থেমে থাকেননি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা। ওসি, এসআইসহ আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য মিলে শিশুটিকে নির্যাতন করেছেন বলে ভিডিওতে দেখা যায়। তবে ভিডিওটি হঠাৎ শেষ হয়ে যাওয়ায় পুরো নির্যাতনের সময়কাল নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, ভিডিওটি কয়েকদিন আগেও ফেসবুকে দেখা গেছে, তবে শুক্রবার (১৮ জুলাই) এটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযুক্ত এসআই আব্দুল হাই বলেন, “শিশুটি আমার পরিচিত। তাই এমনটি করেছি।” তবে বিস্তারিত কিছু জানতে চাইলে তিনি ওসি মতিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
ওসি মতিউর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “এটি ৬ জুলাই এনসিপির পদযাত্রা চলাকালে ঘটে। শিশুটি এনসিপি (NCP)-র নেতাদের খুব কাছে চলে আসে, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের বিষয় ছিল। এজন্য তাকে সরিয়ে নেওয়া হয়।” ওসি আরও দাবি করেন, শিশুটির কাছ থেকে ‘ড্যান্ডি’ নামের একটি মাদকও উদ্ধার করা হয়, তবে তিনি পুলিশি বল প্রয়োগের অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম (Md. Rezaul Karim) স্বীকার করেন, “সে শিশু হলেও নেশাগ্রস্ত ছিল। তবে যেভাবে তাকে সরানো হয়েছে, সেটি সঠিক হয়নি। পুলিশ আরও ঠান্ডা মাথায় বিষয়টি সামলাতে পারত। ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি আরও সতর্কতার সঙ্গে মোকাবিলা করা হবে।”
তবে শিশুদের সঙ্গে এমন আচরণ কতটা আইনসঙ্গত বা নৈতিক—তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং সচেতন মহলের পক্ষ থেকে। সামাজিক মাধ্যমে চলছে নিন্দার ঝড়, অনেকে ভিডিওটির ওপর ভিত্তি করে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন।