জুলাই আন্দোলনে অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা

ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অনন্য ভূমিকা এবার পাচ্ছে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। দীর্ঘদিন উপেক্ষিত সেই আত্মত্যাগ ও সাহসিকতার ইতিহাসকে সামনে আনতে সরকার আগামী সোমবার পালন করতে যাচ্ছে ‘মাদ্রাসা রেজিস্ট্যান্স ডে – ২০২৫’। ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে, ইবনে সিনা হাসপাতালসংলগ্ন রাজপথে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই আয়োজনে থাকবে নানা আয়োজন ও গুরুত্বপূর্ণ উপস্থিতি।

এই দিবসটি যৌথভাবে আয়োজন করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় (Ministry of Cultural Affairs), শিক্ষা মন্ত্রণালয় (Ministry of Education) এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি (Bangladesh Shilpakala Academy)। রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই প্রথমবারের মতো সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় যাত্রাবাড়ী ছিল প্রতিরোধের অন্যতম কেন্দ্র। অনেকেই একে ‘জুলাইয়ের স্ট্যালিনগ্রাড’ বলে অভিহিত করেন। বিশেষত, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও আলেম সমাজের আত্মত্যাগ এবং দুর্বার সাহসিকতা আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। এই সংগ্রামী ঐতিহ্য আজকের প্রজন্মের জন্য গৌরবের নিদর্শন ও প্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‘মাদ্রাসা রেজিস্ট্যান্স ডে – ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি শুরু হবে বিকাল ৩টায় এবং চলবে রাত ১১টা পর্যন্ত। এতে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার (Dr. C R Abrar), মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সচিব, উপদেষ্টা, এবং দেশের সাহিত্য-শিল্প ও শিক্ষা অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা।

অনুষ্ঠানে থাকবে শহিদ পরিবার ও আহতদের স্মৃতিচারণ, আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা, এবং ২০১৩, ২০২১ ও ২০২৪ সালের ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের প্রামাণ্য বিবরণ। সাংস্কৃতিক পর্বে পরিবেশিত হবে হামদ, নাত, নাশিদ, কবিতা আবৃত্তি, দ্রোহের গান এবং দেখানো হবে তথ্যচিত্র—‘ছত্রিশে জুলাই’ ও ‘সাদা জোব্বা, লাল রক্ত’। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ হবে ‘প্রতিরোধ ও পুনর্জাগরণ’ থিমে একটি অভিনব ড্রোন শো, যা প্রতিরোধ চেতনার প্রতীকী উপস্থাপন করবে।

এই উদ্‌যাপনের মধ্য দিয়ে সরকার মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সেই বীরত্বপূর্ণ ভূমিকাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইতিহাসের পাতায় স্থান দিচ্ছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এটিকে “একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক পুনঃস্থাপন” হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *