জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখন তাদের রাজনীতির কৌশলে জনতার উগ্রতা বা ‘মব’-কে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে—এমন মন্তব্য করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (Begum Rokeya University)-এর সাবেক উপাচার্য ও জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ (Nazmul Ahsan Kalimullah)। তার দাবি, ড. ইউনূস (Dr. Yunus)-এর স্বপ্নের রাজনৈতিক দল এনসিপি আজ রণনীতি ও রণকৌশলে বিভ্রান্তির পথ বেছে নিয়েছে এবং প্রতিটি পদক্ষেপে এক ধরনের কর্তৃত্ববাদী আচরণ প্রকাশ পাচ্ছে।
সম্প্রতি নির্বাচন ও সমসাময়িক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, “এনসিপি তাদের রাজনৈতিক অভিযানে এমনসব স্লোগান এবং ভাষার আশ্রয় নিচ্ছে যা জনতাকে উত্তেজিত করে তোলে। তারা এখন নিজেদের রণকৌশলে জনতাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। ‘রোড টু’, ‘মার্চ টু’ জাতীয় নাটকীয় শিরোনাম দিয়ে পদযাত্রা শুরু করলেও, শেষ পর্যন্ত তাদের গর্জন রূপ নেয় বিড়ালের মিউমিউতে।”
গোপালগঞ্জের একটি ঘটনার উদাহরণ দিয়ে ড. কলিমউল্লাহ বলেন, “যে সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে তারা পরোক্ষভাবে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিল, সেই বাহিনীর সুরক্ষা ছাড়া শেষ পর্যন্ত তারা ফিরতেও পারেনি। বর্মে আচ্ছাদিত সাঁজোয়া যানে তাদের প্রস্থান দেখতে হয়েছে। এটা কি সেই বাঘের মতো গর্জন করা শক্তির পরিণতি?”
তিনি আরও বলেন, “অনেকেই মনে করেছিল গোপালগঞ্জ একটি বিচ্ছিন্ন জনপদ, সেখানে হয়তো সহজেই ‘নারেটিভ’ প্রতিষ্ঠা করা যাবে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। চকরিয়ায় গিয়েও তারা দেখেছে, জনতা সহজে ম্যানেজ হয় না। যেই কথা বললে জনতা উত্তেজিত হয়, এনসিপি এখন তাই-ই বলছে—নির্বিচারে।”
নিরাপত্তা ও ব্যবহৃত সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এনসিপির প্রহরার মাত্রা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এখন এপিসি (Armoured Personnel Carrier) আনতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষ ট্যাংক আর এপিসির পার্থক্য বোঝে না, তারা এটাকেই ট্যাংক ভাবে। এতে করে জনমনে এক ধরনের ভীতি ও অবিশ্বাস তৈরি হচ্ছে। এটা নিশ্চয়ই রাজনৈতিকভাবে ইতিবাচক সংকেত নয়।”
শেষে ড. কলিমউল্লাহ মন্তব্য করেন, “শুরু থেকেই এনসিপি বারবার হোঁচট খাচ্ছে। মব নির্ভর রাজনীতি দীর্ঘস্থায়ী হয় না। আর ভয় দেখিয়ে জনতার সমর্থন আদায় করার কৌশল রাজনীতির প্রকৃত ধারার সাথে সাংঘর্ষিক।”