প্রতিদিনের মতোই সোমবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরা থেকে ছেলে আফসান ওহিকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন আফসানা আক্তার টিয়া (Afsana Akter Tia)। কিন্তু সেদিন আর ঘরে ফিরলেন না তিনি। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে একা বাড়ি ফিরলেও তার মায়ের খোঁজ মেলেনি এখনও।
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আফসান ওহি প্রতিদিনের মতোই স্কুলে যায় এবং ক্লাস শেষে ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করছিল মায়ের জন্য। প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ওহির চাচা হাসিবুল (Hasibul) জানান, ছুটির পর স্কুলের সামনে ছেলের সঙ্গে দেখা হয়েছিল আফসানার। ছেলের ব্যাগটি হাতে নেন তিনি। ঠিক সেই মুহূর্তেই ঘটে যায় ভয়াবহ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা, যে ঘটনার অভিঘাতে এখনও নিখোঁজ আফসানা আক্তার।
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, সম্ভাব্য সব হাসপাতাল, ক্লিনিক ও প্রশাসনিক সংস্থায় খোঁজ করা হলেও এখনও পর্যন্ত কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি টিয়ার। উত্তরার দিয়াবাড়ি ফায়ার সার্ভিসের সামনের একটি বাসায় থাকতেন তিনি।
এই বিমান বিধ্বস্তের (Plane Crash) ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং ১৭১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে প্রশাসন। আহতদের মধ্যে অন্তত ৫০ জন দগ্ধ অবস্থায় ভর্তি আছেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট (National Burn and Plastic Surgery Institute)-এ।
দেশজুড়ে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা সৃষ্টি করেছে শোকের ছায়া। সরকার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক (State Mourning) ঘোষণা করেছে, যা পালন করা হবে মঙ্গলবার, ২২ জুলাই।
বিমান বিধ্বস্তের সুনির্দিষ্ট কারণ অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে গঠিত হয়েছে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি, এমনটি জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (ISPR)। কমিটি স্বল্প সময়ের মধ্যে ঘটনার ব্যাখ্যা ও দায়ীদের শনাক্ত করতে কাজ শুরু করেছে।
নিখোঁজ আফসানার ছেলেকে নিয়ে তার পরিবার এখন গভীর উদ্বেগ ও শোকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। নিরাপদে বাসায় ফিরলেও ছোট্ট ওহির চোখে এখনো মায়ের জন্য অসহায় অপেক্ষা।