উত্তরায় সাম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনা ও মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party – NCP)। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম (Nahid Islam) বলেন, “শিক্ষা উপদেষ্টা দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতি দায়িত্বশীল আচরণে এড়ানো যেত।”
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, “বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের সঠিক সংখ্যা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। আমরা চাই নিরপেক্ষ তদন্ত হোক এবং তাতে কেবল সরকারি নয়, বেসরকারি বিশেষজ্ঞ ও স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরাও থাকুক। গুজব ছড়ানোর পেছনে মূলত তথ্য গোপনই দায়ী। সরকার যদি যথাসময়ে সঠিক ও স্বচ্ছ তথ্য দিত, শিক্ষার্থীদের মধ্যে এত ক্ষোভ জমে উঠত না।”
তিনি আরও বলেন, “ঘটনার পর আমরা সরকারের কাছ থেকে মানবিক ও দায়িত্বশীল প্রতিক্রিয়া আশা করেছিলাম। কিন্তু গতকালের পদক্ষেপগুলো ছিল অব্যবস্থাপূর্ণ এবং নিছক আনুষ্ঠানিকতা। এতে শুধু জনগণের আস্থা কমে না, বরং পরিস্থিতিও সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।”
মাইলস্টোন কলেজে ‘মরদেহ গুম’ হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম সরাসরি বলেন, “যে ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে, তাতে সরকারের এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল জনসমক্ষে স্পষ্টভাবে বলা—সেসময় কতজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ছিলেন, কতজন মারা গেছেন, আর এখনও কতজন নিখোঁজ। এসব তথ্য হালনাগাদ না করায় জনমনে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।”
সবচেয়ে কড়া ভাষায় তিনি আক্রমণ করেন শিক্ষা উপদেষ্টাকে। বলেন, “শিক্ষা উপদেষ্টা ফোন রিসিভ করছেন না। এমনকি অন্য উপদেষ্টারাও তার খোঁজ পাচ্ছেন না—এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। দেশের ছাত্রসমাজ যখন গভীর উদ্বেগে, তখন এমন দায়িত্বহীন আচরণ সরকারের দুর্বলতা প্রকাশ করে।”
এসময় এনসিপি আহ্বায়ক মাইলস্টোনের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আছি। তারা যা বলছে, তা শুধু একজন ছাত্রের কষ্ট নয়—এটি একটি জাতির প্রশ্ন।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা তাসনিম জারা, এবং দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা। উপস্থিত নেতারা জানান, তারা চাইছেন এ ঘটনার সত্যতা উদঘাটন এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক।